গাজীপুরে কালীগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় ছিনতাইকারী সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছে ভূক্তভোগীর পরিবার। এঘটনায় শুক্রবার এক ইউপি সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। কালীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত দুলাল মিয়া (৫৫) কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের পাড়ারটেক গ্রামের মৃত বিল্লাল মিয়ার ছেলে। অপরদিকে, আটককৃত মাহবুব (৪০) একই ইউনিয়নের বর্তুল গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য।
এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জের জিন্দা এলাকার রায়হান ও সাইদুল মোটরসাইকেল নিয়ে পার্শ্ববর্তী গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বর্তুল গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। পথে নির্জনস্থানে পৌছলে তাদের পথরোধ করে আগলা গ্রামের সোহেল, তার ছেলে শান্ত ও পাড়ারটেক গ্রামের দুলাল সহ কয়েক যুবক। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহীদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে মোটরসাইকেলের গতিরোধকারী যুবকরা পালিয়ে সোহেলের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে মাহবুব মেম্বারের নেতৃত্বে তার ভাই ও শ্যালকসহ ১০/১২জন লোক ওই বাড়িতে হানা দিয়ে দুলালকে আটক এবং বাড়িতে ভাংচুর করে। তারা ছিনতাইকারী সন্দেহে দুলালকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় দুলালকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণের পরামর্শ দেন হাসপাতালের চিকিৎসক শাফেয়ী আলম। পরে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে দুলালের মৃত্যু হয়।
নিহতের বড় ছেলে আলামিন (২৫) বলেন, সোহেল মামার বাড়ি গিয়েছিলেন আমার বাবা। সেখানে ওই এলাকার মাহবুব মেম্বার উপস্থিত থেকে ও নেতৃত্ব দিয়ে তার ছোট ভাই হাবীব, শ্যালক রানা, প্রতিবেশী ফরহাদ ও মাসুদ অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার বাবার উপর হামলা চালায়। এসময় তারা পিটিয়ে ও কুপিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করে। হামলাকারীরা আমার মামার বাড়িতেও ভাংচুর করে এবং মামা সোহেল ও মামাতো ভাই শান্তকেও হত্যার জন্য খোঁজ করে। ঘটনার সময় আমার বাবা শান্ত’র কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল।
কালীগঞ্জ থানার ওসি ফায়েজুর রহমান বলেন, পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। নিহতের শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে একাধিক আঘাতে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার মাহবুব মেম্বারকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।