গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (গাসিক) সাবেক মেয়র ও আসন্ন সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন বাতিল হওয়া মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আয়কর রিটার্নে সম্পদ ও তথ্য গোপন করার অভিযোগ তুলে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছেন অপর মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। তিনি এ নির্বাচনে গণফ্রন্ট মনোনীত মেয়র প্রার্থী।

মঙ্গলবার দুপুরে দুদক গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত ও পরে পদত্যাগী মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সম্পদ গোপন করেছেন। যা তারই নির্বাচনী হলফনামায় উঠে এসেছে। মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন/বিবরণীতেও সম্পদ গোপন করার ও আয়-ব্যয়ের হিসাবে গড়মিল দেখা গেছে। মহানগরের (ছয়দানা-হারিকেন) এলাকায় তার বাড়ির আধুনিক সুপরিসর লিফট, দুই ডজন এসি, ফ্রিজ, টিভি, কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ ইলেকট্রনিক-সামগ্রী দেখিয়েছেন মাত্র এক লাখ ৭৫ হাজার টাকার। আর কনফারেন্স টেবিল ও অর্ধশত চেয়ার, আলিশান খাট, রাজকীয় সোফাসহ আসবাবপত্র দেখিয়েছেন এক লাখ ৫০ হাজার টাকার। এতে পাঁচ কোটি টাকার গড়মিল বেরিয়ে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘আয়কর অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম আয়কর রিটার্নে ব্যাপক গড়মিল করেছেন। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার কাছে তার হলফনামার তথ্য গড়মিল মনে হয়েছে। এ জন্য আমি অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের একটি অনুলিপি নির্বাচন কমিশন অফিসেও পাঠিয়েছি।’

দুর্নীতি দমন কমিশন গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার জানান, ‘জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে লিখিত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমাদের এখানে বাছাই কমিটি আছে। তাদের বাছাইয়ের পর যদি তদন্ত-যোগ্য হয়, তাহলে সুপারিশ নিয়ে অনুমোদনের জন্য ঢাকা পাঠানো হবে। পরে ঢাকা থেকে যাচাই শেষে যদি মনে করেন তদন্ত-যোগ্য, তাহলে আমাদের অনুমতি দেবেন। পরে আমরা এ অভিযোগের বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করব।’

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জেলা নির্বাচন অফিসার ও গাসিক নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার এ এইচ এম কামরুল হাসান জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গত ৩০ এপ্রিল যাচাই বাছাই শেষে এদের মধ্যে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। অবশিষ্ট নয়জনের মনোনয়ন পত্র বৈধ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়াও মনোনয়নপত্র জমাদানকারী সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ৮২ জনের মধ্যে ছয়জনের মনোনয়নপত্র বাতিল এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৮৯ জনের মধ্যে ১৭ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, আগামী ৭ মে প্রার্থীতা (মনোনয়নপত্র) প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ৯ মে। আগামী ২৫ মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।