দেশের গণমাধ্যম ফ্যাসিবাদের ভয়াল গ্রাসে আক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেশ সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে সবগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। আমি যখন আপনাদের মাঝে আসি, যখন আপনারা কথা বলেন, তখন মনে হয় যে এখনো বোধহয় কিছু অবশিষ্ট আছে । যখন আবার পত্র-পত্রিকার দিকে তাকাই, চ্যানেলগুলোর কথা শুনি তখন মনে হয়, এখানেও সেই ভয়াল গ্রাস ফ্যাসিবাদের ভয়াল গ্রাস থাবা দিয়েছে।

একটি রাষ্ট্রে যখন ফ্যাসিবাদ সাকসেস তখনই সমগ্র সমাজের মধ্যে একটা ভীতি, একটা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তথা প্রেস ফ্রিডমটা নেই। তার যে অবস্থা এই গণবিচ্ছিন্ন সরকার তৈরি করেছে ইতিপূর্বে আর কখনো আমরা লক্ষ্য করিনি। এখন এক সেন্সর নিতে হয় আপনাদেরকে সেলফ সেন্সরশিপ করে দেয়।

তিনি বলেন, সবাই ভাবেন যে এটা লেখা যাবে কী যাবে না, আবার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যেতে হবে কিনা। এখানে রুহুল আমিন গাজী ভাই বসে আছেন, সংগ্রামের সম্পাদক আসাদ সাহেব তারা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অনেক সাংবাদিক আছেন, যারা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে এখন পর্যন্ত সেই মামলায় ঝুলছেন। আমি এবার জেলে গিয়ে দেখলাম যে আমাদের অনেক যুবক তরুণ এমনকি অপরিণতবয়স্ক ছেলে যাদের বয়স ১৮ হয়নি, তারাও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে আটক হয়েছে, জেলের মধ্যে আছে।

তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন, এখন এমন একটা অবস্থা হয়েছে আপনারা যে এক হয়ে লড়াই করবেন তার সুযোগ রাখা হচ্ছে না। আপনাদের প্রেসক্লাবে বিভাজন হয়েছে, আপনাদের সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে। মৌলিক যে বিষয়টা একটা গণতান্ত্রিক সমাজ, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তার জন্য একটা মুক্ত গণমাধ্যম দরকার সেই বিষয়টাকে এরা বেমালুম চেপে দিয়েছে।

দেশের অবস্থাকে ‘ভয়াবহ’ অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজসহ পেশাজীবীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ‘র সভাপতিত্বে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের। এ ছাড়া বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পরে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, আবদুল হাই শিকদার, এম এ আজিজ, কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খানসহ সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন।

ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ড. মান্নান, অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার সম্পাদক মুহাম্মদ আতাউর রহমান সরকার, দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আশরাফুল আলম ইমন, শাহীন আহমেদ খান প্রমুখ।