ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ফয়সাল মিয়া (২৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ও সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশত গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কালিকচ্ছ বাজার এলাকায় স্থানীয় সূর্যকান্দি ও ধরন্তি গ্রামের লোকজনদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।

নিহত ফয়সাল ওই উপজেলার কুট্টাপড়া গ্রামের রাকিব মিয়ার ছেলে।

নিহতের পরিবারের দাবি, রাকিব পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশের দাবি, দু’পক্ষের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ হলে স্প্রিন্টারের আঘাতে তিনি নিহত হয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ বাজারে সূর্যকান্দি গ্রামের ইকবাল চৌকিদারের ছেলে অটোরিকশাচালক আকাশ রাস্ত পার হওয়ার সময় ধরন্তী মূলবর্গ গ্রামের হুমায়ন মেম্বারের ছেলে তোফাজ্জলের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে। এনিয়ে গতকাল তাদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও পরে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার দুপুরে তোফাজ্জলের লোকজনেরা কালিকচ্ছ বাজারে আকাশের উপর আবারো হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন আকাশ। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের পর কালিকচ্ছ বাজারে দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাজারের কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। পরে খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশত গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।

নিহত রাকিবের মা হালিমা খাতুন দাবি করেন, আমার ছেলে পুলিশের গুলিতে মারা গেছে।

নিহত রাকিবের মামা ওসমান বলেন, রাকিবের বাড়ি কুট্রাপাড়ায় হলেও আমাদের দোকানে থাকতেন। আজ ঝগড়া শুরুর পর আমরা দোকানের তালা লাগাচ্ছিলাম। এ সময় পুলিশ এসে আমার ভাগ্নে রাকিবের উপর গুলি করে। তাকে কেন গুলি করা হলো? আমরা তো ঝগড়ার সাথে জড়িতও না? এর বিচার চাই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, মোটরসাইকেলে চড়া নিয়ে সূর্যকান্তি ও ধরন্তি গ্রামের দুই যুবকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে উভয় গ্রামের লোকজন রাতে কালিকচ্ছ বাজার এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি ককটেলও বিস্ফোরণ ঘটায় সংঘর্ষকারীরা। ককটেলের স্প্রিন্টারের আঘাতে যুবক নিহত হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশকে ৫০-৬০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করতে হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় অন্তত ২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত বেশ কয়েকটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তী সংর্ঘষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।