বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামের সরিয়ে নেওয়া মালামাল ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তিনটি কাভার্ডভ্যানে রোববার সন্ধ্যায় মালামালগুলো এসে পৌঁছায়। সোমবার সকাল থেকে এসব নামানোর কাজ শুরু হয়।

ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল মালামাল বুঝে নিয়েছেন। ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে শুধু কিউরেটর নুরুজ্জামান নয়নকে পূর্বাচলে শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামে বদলি করা হয়েছে। অন্য ১৬ জন আবার কাজে যোগ দিয়েছেন।

জানা গেছে, বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে আগে ফুটবল খেলা হতো। গত ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে উন্নীত করে। স্টেডিয়ামের চার টাওয়ারে ১০০টি করে মোট ৪০০ ফ্লাড লাইট বসানো হয়। এ লাইটগুলো আট লাখ ওয়াট বিদ্যুতের আলো দেয়।

ভেন্যুটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের ৩০ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু ঘোষণা দেয়। একই বছর স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ভেন্যুর স্বীকৃতি লাভ করে। এখানে আন্তর্জাতিক খেলা বন্ধের পর ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ ফ্লাডলাইটগুলো জ্বালানো হয়েছিল। স্টেডিয়ামে উন্নতমানের পাঁচটি পিচ রয়েছে। ২০০৬ সালের পর থেকে এ ভেন্যুতে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে কোন খেলা হয়নি। তবে দিনের বেলা জাতীয় লীগ, স্থানীয় প্রিমিয়ার ডিভিশন, প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ ও কর্পোরেট লীগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার কতিপয় কর্মকর্তার অসহযোগিতা, খেলা আয়োজন করতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গত ১ মার্চ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম থেকে জনবল ও মালামাল মিরপুর স্টেডিয়ামে প্রত্যাহার করে নেয়।

ভেন্যু ম্যানেজারসহ ১৭ কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিভিন্ন স্টেডিয়ামে বদলি করা হয়। এ নিয়ে শুধু ক্রিকেটপ্রেমি নয়; সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মানববন্ধন, আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

তবে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাছুদার রহমান মিলন বিসিবির অভিযোগটি দৃঢতার সাথে অস্বীকার করেন। এদিকে অনেক জল্পনা কল্পনার পর গত শনিবার বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম বিসিবির ভেন্যু হিসেবে বহাল রাখায় বগুড়াবাসীদের মাঝে স্বস্তি দেখা দেয়।

ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল জানান, কয়েক দিন রক্ষণাবেক্ষণে কেউ না থাকায় মাঠের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গেছে। বর্তমানে মাঠে জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ চলছে। আগামী ১৩ এপ্রিল ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পুরোদমে মাঠ সংস্কার করা হবে। তিনি আরও জানান, ঈদের পর বিসিবির একটি টিম স্টেডিয়াম পরিদর্শনে আসবে। জামিলুর রহমান জামিল ভেন্যুটির সার্বিক উন্নয়নে বগুড়াবাসীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।