সাংবাদিক পরিচয়ে আশ্রয় নিয়ে সাংবাদিক দম্পত্তিকেই প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সর্বনাশ ঘটিয়েছে দুই সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলাম ওরফে আ: ছালাম। তারা নারী সাংবাদিকের ছবি সংগ্রহ করে নিচের অংশে নগ্ন চিত্র যুক্ত করে ছড়িয়ে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ভূইফোড় অনলাইন পোর্টালে। এরপর পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সীমাহীন মানসিক যন্ত্রণায় ওই সাংবাদিক দম্পত্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন বিপর্যন্ত করে দিয়েছে। মাদারীপুর জেলা সদরে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে এশিয়ান টিভির কথিত ঢাকার সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম খান ও তার সহযোগি মানক কন্ঠের সাব এডিটর পরিচয়দান কারি রিয়াজুল ইসলাম ওরফে ছালাম। এরপর মাদারীপুর প্রেস ক্লাব নামে একটি ভুয়া ফেজবুক আইডি খুলে মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেই প্রেক্ষিতে মাদারীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ গতকাল রাতে ঢাকার সাভার ও গুলশান থেকে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম খান ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে।

এজাহার সূত্রে জানা জায়,সাংবাদিক দম্পত্বির সাথে পরিচয়ের সুত্রে সু কৌসলে পরস্পর যোগ সাজোসে হঠাৎ বাসায় আসেন। সরল বিশ^াশে মেহমান হিসেবে আপ্যায়ন করে বাসায় থাকতে দেয়। বাসায় অবস্থান কালে তাদের অনুমোতি ছাড়াই রাতে ব্যাক্তিগত মোবাইল ও ল্যাবটবে থাকা ব্যাক্তিগত কিছু ছবি তথ্য ও উপাত্য ফেজবুক মেইলের পাসওয়ার্ড সুকৌসলে নিয়ে যায়। কিছুদিন পরে সাংবাদিক দম্পত্বির ফেজবুক মেসেঞ্জার ও হোয়টস আপে আপত্বিকর কিছু ছবি পাঠিয়ে ৫লক্ষ টাকা দাবি করে। একপর্যায় টাকা না পেয়ে হোয়াটস আপ ফেজবুক নাম সবর্ঃস্ব কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে সাংবাদিক দম্পত্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন বিপর্যন্ত করে দিয়েছে। প্রতারকচক্রের মূল হোতা সাইফুল ইসলাম খানের (৩৬) বাবার নাম সিরাজ খান, মাতা: মোসাম্মৎ সাহেরা বেগম, বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন যোদ্ধা করিসিং গ্রামে এবং তার প্রধান সহযোগী রিয়াজুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে ইসলাম চৌধুরী (৩৮) পরিচয় দেয়া প্রতারকের প্রকৃত নাম আঃ ছালাম, পিতা ওয়াজেদ আলী, মাতা জোহরা বেগম, তার বাড়ি ঝালকাঠি সদরের কলেজ রোডে।

এ বিষয়ে রোববার (৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় মাদারীপুর মডেল থানার অফিসার্চ ইনচার্জ মোঃ মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন,সাংবাদিক দম্পতির ল্যাপটপ থেকে তাদের স্বামী স্ত্রীর বিভিন্ন ছবি, ভিডিও চুরি করে আনে তারা। ঢাকায় ফিরেই নারী সাংবাদিকটির বিভিন্ন ছবির নিচের অংশে নানা নগ্ন দৃশ্য সংযোজন করে তা পাঠিয়ে দেয় তার স্বামীর ইনবক্সে। এরপর সাইফুল ইসলাম ও রিয়াজুল নানারকম ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং তা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিশোধ না করলে নগ্ন দৃশ্যাবলী অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয় তারা এবং মানসিক চাপ ও ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে কিছু নগ্ন ছবি ওই সাংবাদিক দম্পত্তির পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশী ঘনিষ্ঠজনদের কাছে পাঠিয়েও দেয়।

মাদারীপুর মডেল থানার টিম অভিযানে নামে এবং ঢাকা, সিঙ্গাইরসহ বিভিন্ন স্থানে টানা ১০ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে কথিত এশিয়ান টিভির সাইফুল ইসলাম খান ও তার সহযোগী রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের কম্পিউটারে যে আলামত লুকানো ছিলো তা সহ মোইল জব্দ করি।

সাবরীন জেরীন,মাদারীপুর।