ইউক্রেন আগ্রাসনের পর রাশিয়ার জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার জেরে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ সস্তায় রুশ জ্বালানি তেল আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে ভারত অন্যতম। ২০২২ সালে যুদ্ধের পর থেকে ভারতে তেল রপ্তানির হার ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। অন্যান্য বছরের তুলনায় গত বছর এই রপ্তানির হার অন্তত ২২ গুণ বেশি। আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্দার নোভাক মঙ্গলবার মস্কোতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালানি তেল বিক্রির ক্ষেত্রে এখন প্রচলিত বাজারের পরিবর্তে বন্ধুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশের বাজারকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০২২ সালে ভারতে ২২ গুণ বেশি জ্বালানি তেল সরবরাহ করেছে রাশিয়া।’
তেলের উত্তোলন ও রপ্তানিতে বিশ্বে তৃতীয় শীর্ষস্থানে থাকা রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা একসময় ছিল ইউরোপ। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিশেষ সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত বছরের মার্চ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে কার্যকর হলেও পূর্ণমাত্রায় কার্যকর হয় ডিসেম্বর থেকে। তার আগেই অবশ্য বন্ধুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশকে হ্রাসকৃত মূল্যে তেল বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিল মস্কো; আর সেই প্রস্তাবে সবার আগে সাড়া দেয় চীন এবং ভারত।
রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রীর পাশপাশি দেশটির জ্বালানি খাতের নির্বাহীর দায়িত্বেও আছেন আাালেক্সান্দার নোভাক। ভারতের পাশাপাশি চীনেও গত বছর রুশ তেলের রপ্তানি বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে নোভাক বলেন, ‘আমাদের তেলশিল্প পূর্ণগতিতে চলছে।’
তার এই কথার সঠিকতা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠতে পারে; কারণ জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাস থেকে খনিজ তেলের উত্তোলন ৫ লাখ ব্যারেল (এক ব্যারেল=১৫৯ লিটার) হ্রাস করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে রুশ তেলের দামও নির্ধারণ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে লোকসান থেকে বাঁচতেই তেলের উত্তোলন হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছে দেশটি।