সরকারের উদ্দেশ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘সময় থাকতে সচেতন হোন। তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে জনগণকে রেহাই দিন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিন। সুশাসন ও ন্যায়বিচার কায়েম করুন। না হলে সামনে বিপদ অপেক্ষা করছে।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করুন। তাহলে সঠিক উত্তর ও পন্থা পেয়ে যাবেন। ক্ষমতায় টিকিয়ে থাকার লোভ বিপদের কারণ হতে পারে। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে।’
তিনি আজ রাজধানীর পূর্ব পান্থপথে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন।
কর্নেল অলি বলেন, ‘দেশে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। কথায় কথায় মারামারি খুনোখুনি। সবার মধ্যে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগ দ্বারা ছাত্রছাত্রী নির্যাতন/অনৈতিক কর্মকাণ্ড অহরহ ঘটছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আলিশান জীবন-যাপন করছে। তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।’
তিনি বলেন, ‘পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশে ঢুকছে বিপুল অবৈধ অস্ত্র, সরকারের চৌকস পুলিশ বাহিনী জানে না এমন হতে পারে না। আর যদি সরকার জানে এমন হচ্ছে তবে কেন এই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে না। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী- দেড় লাখ অস্ত্রের হালনাগাদ তথ্য নেই। অথচ ২০১৮ সালে পুলিশ-বিজিবি এবং সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করেছিল। পুলিশ ও র্যাব জানে অবৈধ অস্ত্র কোথায় আছে। দেরিতে হলেও এই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগ নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদিন পূর্বেও আমি বলেছিলাম ঋণ খেলাপিরা অর্থনীতি ধ্বংস করবে। এখন দেখি ঋণ খেলাপি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মধ্যবিত্ত ও গরিবের টাকা লুণ্ঠন করছে। দেশে এখন লুটপাটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। অর্থ সংকটের কারণে গত ৭ মাসে এডিবি বাস্তবায়ন মাত্র ২৮ শতাংশ। শূন্য অগ্রগতি নিয়ে বছর পার ২৩৬ প্রকল্পের যা বিগত ৭ বছরে সর্বনিম্ন। সরকারের মোট ঋণ সাড়ে ১৩ লাখ কোটি টাকা। তন্মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। ব্যাংক ঋণ ৪ লাখ ১৯ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। জিপিএফ থেকে ৬২ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা, বিগত অর্থবছরে সুদ বাবদ ব্যয়- ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরে সুদ বাবদ ব্যয় হবে ৭৩ হাজার কোটি টাকা। সুদে বিপুল অর্থ ব্যয়ের কারণে রাজস্ব হ্রাস পাচ্ছে। আমদানি-রপ্তানি হ্রাস পাচ্ছে। টাকার অবমূল্যায়ন ২৬ শতাংশ হয়েছে। এসব কিছু বিবেচনা করলে বোঝা যায় অর্থনৈতিক অবস্থা সুখকর নয়।’