বাংলা একাডেমি অন্যায়ভাবে বিভিন্ন স্টল বন্ধ করে দিয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি কয়েকটি বই নিয়ে আপত্তি তুলে একটি প্রকাশনা সংস্থাকে একুশে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ না দেওয়ায় বাংলা একাডেমির সমালোচনা করে বলেন, কি দুর্ভাগ্য আজকে? যে বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাভাষা বিকাশের জন্যে, চিন্তা-চেতনার বিকাশের জন্যে, মুক্ত চিন্তার জন্যে। সেই বাংলা একাডেমি আজকে অন্যায়ভাবে বিভিন্ন স্টল বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন বই প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়ে আজকে একটা কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং একই সঙ্গে এই ২১ ফেব্রুয়ারিতে নতুন করে শপথ নিতে চাই, আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করব, আমরা বাংলাদেশে জনগণের যে কথা বলার অধিকার, মুক্ত চিন্তার অধিকার, জনগণের লেখার অধিকার, তার যে স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতা আমরা নিশ্চিয় প্রতিষ্ঠিত করব। গতকাল রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথ সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, কি দুর্ভাগ্য। আজকে জাতি সেই ৫১ বছরে স্বাধীনতার পরেও এবং ১৯৫২ সালের এতোদিন পরে আজকে এই জাতি তার অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে, চিন্তার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, কথা বলার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, লেখার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

বাংলাদেশে এখন ‘একনায়কতন্ত্র’ চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এখনো আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী, তারা আজকে কারাগারে আবদ্ধ রয়েছেন এবং আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে, গাযেবী মামলা দিয়ে সারা দেশে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এক কথায় এদেশ এখন সম্পূর্ণভাবে একটা একনায়কতন্ত্র এবং তাদের সেই পুরনো ঘটনা সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে এখানে একটা ভয়াবহ রকমের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সোচ্চার হতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আজকে সেই লক্ষ্যে আমরা এবার ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করতে যাচ্ছি, জাতিকে আবার ঐক্যবদ্ধ করা, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, অধিকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। শুধু ভাষার স্বাধীনতা না। জনগণের সামগ্রিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যেই আমরা এই ২১ ফেব্রুয়ারি নতুন করে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে আমরা শপথ গ্রহণ করব। এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব ভাষা শহীদদের স্মরণে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন।

অন্যদের মধ্যে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, মনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমদে, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের মুনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, উলামা দলের মাওলানা সেলিম রেজা, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।