অনলাইন জুয়া খেলায় কোটি কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগে চার জুয়াড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সারা বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট, ফুটবললীগ, টেনিস এবং বর্তমানে বিশ^কাপ ফুটবল খেলার মাধ্যমেও প্রধানত অনলাইনে ডিজিটাল কয়েন লেনদেন করে জুয়া খেলা হতো। শনিবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মোঃ শামছুর রহমান তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ফরিদপুরের সদরপুর থানাধীন চর নাসিরপুর এলাকার মৃত কুদ্দুস হাওলাদারের ছেলে সোহেল (২৮), গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার টাংকিরপাড় এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫), একই থানার পূর্ব চান্দনা এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে রেজাউল হাসান ওরফে রিয়াজ (৩৪) ও ভোড়া এলাকার মৃত গোলাম কিবরিয়ার ছেলে মোঃ মাসুম (২৫)।
জিএমপি’র ওই কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা হতে অনলাইন জুয়াড়ি চক্রের ৪সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল, মেসেঞ্জার, হোয়টাস অ্যাপ চ্যাটিং ও এমএফএস (বিকাশ/নগদ/রকেট) যাচাই করে দেখা যায় যে, তারা ই-ব্যাংকিং এর মাধ্যমে লেনদেন করে বিপুল পরিমান টাকা বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছে।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের জব্দকৃত মোবাইল, বিকাশ, রকেট ও ব্যাংক হিসাব এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, অবৈধ অনলাইন জুয়ার প্লাটফর্ম (নবঃনবব.ষরাব, াবষশর.ষরাব, নধলর৩৬৫.ষরাব, গধুধ.ষরাব, ডরহনুুঁ.নবঃ, ধম.াবষশরবী.ষরাব ও নবঃনুুঁ৩৬৫) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সমাজের উঠতি বয়সের যুবকদের আসক্ত করে ডিজিটাল কয়েন লেনদেন করে জুয়া খেলা হতো। তারা মালোয়েশিয়া/দুবাই এর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটস অ্যাপ বিজনেস একাউন্ট (ডযধঃংঅঢ়ঢ় ইঁংরহবংং অপপড়ঁহঃ) খুলে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় গোপন করে যোগাযোগ করে থাকে।
তিনি আরো জানান, এই সার্ভারটি প্রধানত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে াবষশর.ষরাব এর এ্যাডমিন আকাশ মালিক ওরফে রনি। তিনি বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত দুবাই প্রবাসী। তিনি এটিকে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশী নাম্বার ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশের ৫টি লেয়ারে তথা এ্যাডমিন, সাইট সাব এ্যাডমিন, সুপার এজেন্ট, মাষ্টার এজেন্ট ও ইউজার (রুট লেভেলের ব্যবহারকারী) লেয়ারে বিভক্ত করে। প্রতিটি লেয়ার তার উপরের লেয়ারের মাধ্যমে কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। এই ডিজিটাল কয়েন লেনদেন মুলতঃ সারা বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট, ফুটবললীগ, টেনিস এবং বর্তমানে বিশ^কাপ ফুটবল খেলার মাধ্যমেও প্রধানত অনলাইনে জুয়া খেলা হয়। ব্যবহারকারী জয়ী হলে ডিজিটাল কয়েন ফেরত নিয়ে এর বিপরীতে আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে থাকে। হেরে গেলে তার পুরো ডিজিটাল কয়েনটাই পর্যায়ক্রমে জুয়া পরিচালনাকারীর কাছে জমা হয়ে যায়। ফলে দেশ হতে পাচার হয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।
এ ঘটনায় পুলিশ জিএমপি’র সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু এবং সিআইডি কর্তৃক মানি
লন্ডারিং আইনে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।