রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ছুরিকাঘাতে এক ব্যক্তিকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পাশাপাশি এ ঘটনায় মো. আরিফ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ছিনতাইকৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আজ রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, গত রোববার ভোর ৫টা ১০ মিনিটে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে সংবাদ আসে ধলপুর এলাকায় একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের দল। পরে চিকিৎসক ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, পরে পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। নিহতের কাছে থাকা জিনিসপত্র যাচাই ও প্রযুক্তির সহায়তায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তার নাম খলু মিয়া (২৮)। তিনি ঢাকার নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী। ঘটনার দিন তিনি গাইবান্ধা থেকে সোনালী পরিবহনে রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ এসে পৌঁছান। তিনি গোলাপবাগ থেকে হেঁটে ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে মায়ের দোয়া টায়ার অ্যান্ড ব্যাটারি শপের সামনে পৌঁছালে কতিপয় ছিনতাইকারী তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আরিফ জানায় সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। একাধিক ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় সে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। কিন্তু উক্ত ঘটনায় পুলিশি তৎপরতা দেখে নিজেকে রক্ষা ও হত্যার ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আগে ইস্যু হওয়া ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার হওয়ার লক্ষ্যে নিজের বাসায় অবস্থান করেন। ঘটনার পরদিন রাতে পুলিশ আগের ওয়ারেন্টে আরিফকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আরিফকে উক্ত ছিনতাই ও হত্যার ঘটনায় শনাক্ত করা হয়। থানা পুলিশের টিম জেলহাজতে গিয়ে আরিফকে শনাক্ত করে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ডে আরিফ স্বীকার করে, সে তার অন্য সহযোগীদের নিয়ে ঘটনার দিন রাতে একটি ছুরিসহ ধলপুর নতুন রাস্তায় একটি ব্যাটারির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। ভিকটিম রাস্তা দিয়ে আসার পথে তারা তার গলায় ছুরি ধরলে লোকটি তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তারা ভিকটিমের বুকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, পরবর্তী সময়ে আরিফ আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ও তার সহযোগীদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।