বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, সংবিধান পরিবর্তন করেই বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার কথায় তার দলীয় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। বিএনপি প্রণীত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ১০ দফা ও রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার দাবীতে মানুষ রাজপথে নেমেছে। যতো বাঁধা আসুক না কেন দাবী মেনে না নেয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকবে। তারা এ সরকারকে পদত্যাগ করিয়ে ঘরে ফিরবে। এ ব্যাপারে কোন আপোস করা হবে না। এজন্য শুধু শত শত নয়, হাজার হাজার নেতা-কর্মী শহীদ হওয়ার জন্যে প্রস্তুত আছে। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার দাবি মতে সংবিধানে সংযোজিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। আইয়ুব গেছে, ইয়াহিয়া গেছে, এরশাদ গেছে, শেখ হাসিনাকেও ক্ষমতা ছেড়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, পৃথিবী চায় বাংলাদেশে সকলের অংশ গ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন, সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। অথচ একমাত্র শেখ হাসিনা তা চায় না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বিধায় জনগণকে তাদের এতো ভয়। তিনি বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় যারা এমপি হয়েছেন, জনগণ তাদেরকে সংসদ থেকে বের করে নিয়ে আসবে। জনগণের বিজয় অতি সন্নিকটে। এই দানবীয় সরকারের পতন ঘটিয়ে মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। ’৯০ এর চেতনায় আবারো গণঅভ্যুথান সৃষ্টি হবে। এই গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা ছেড়ে যেতে হবে। এই আন্দোলন হবে জনগণের আন্দোলন, দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন। জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে আবারো প্রমাণ করবো বিএনপি জনগণের দল।
শুক্রবার গাজীপুর মহানগর বিএনপি আয়োজিত ‘বিএনপি ঘোষিত যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফা দাবি ও রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমান উল্লাহ আমান এসব কথা বলেন।
গাজীপুর মহানগরীর টেকনগপাড়া এলাকাস্থ সাগর সৈকত কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু ও সদস্য ডা. মাজহারুল আলম।
বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান বলেন, গত ৪ মাসে ১০ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে শেখ হাসিনার হাত রক্তে রঞ্জিত করেছে। এই রক্তে রঞ্জিত হাত কখনোই ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। ক্ষমতায় থাকতে আইয়ুব পারেনাই, ইয়াহিয়া পারে নাই, এরশাদ পারে নাই। তাদেরকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে, শেখ হাসিনাও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, তাকেও ক্ষমতা থেকে যেতে হবে। এজন্য শুধু দশ জন কেন, দশ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করলেও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় না করে জনগণ রাজপথ ছাড়বে না।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশসহ রাষ্ট্রের সব কাঠামো শেখ হাসিনা ধ্বংস করে দিয়েছে। শেখ হাসিনা আবারো ১৪ সাল ও ১৮ সালের মতো নির্বাচন করতে চায়। আমার ভোট সরকার দিবে, এই নির্বাচন এবার জনগণ হতে দিবে না।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানী শাসকদের সঙ্গে কোন বৈঠকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা বলেন নি। কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা দিয়েছেন। তিনিই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রথম কথা বলেন।
বেনজির আহমেদ টিটু বলেন, গণতন্ত্র মানেই জিয়া পরিবার, আর আওয়ামী লীগ মানেই গণতন্ত্রের ধ্বংস।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মাজহারুল আলম বলেন, আর যেন কোনো স্বৈরাচার গণতন্ত্রকে হত্যা করতে না পারে সেজন্যই বিএনপি ঘোষিত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ১০ দফা ও রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ রূপরেখা যেকোনো মূল্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম শামীম এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মো. শওকত হোসেন সরকার। সভায় বিএনপি নেতা ড. অ্যাডভোকেট শহীদউজ্জামান, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, আহমদ আলী রুশদী, মাহবুবুল আলম শুক্কুর, বসির আহমেদ বাচ্চু, সিটি কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূইয়া, সরকার জাভেদ আহমেদ সুমন, সিটি কাউন্সিলর মোছলেম উদ্দিন চৌধুরী মূসা, তানভীর সিরাজ, মহানগর কৃষকদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান, যুবদল নেতা শওকত হোসেন সহ নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।