সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় তরিকুল ইসলাম মোবারক (৩৮) নামে এক রকেট এজেন্টকে গুলি করে পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত চার ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় বিদেশি রিভলবার, ছয় রাউন্ড গুলি ও দুটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়াও ওই ছিনতাইকারীদের দেওয়া তথ্যমতে একটি ওয়ান শুটারগানসহ আবু হাসেম (২৬) নামে আরও এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল।
গ্রেফতাররা হলেন- উল্লাপাড়া উপজেলার গয়হাট্টা ভাগলগাছি গ্রামের মো. মাজেদ আলী আকন্দ ওরফে মাজম আলীর ছেলে মো. সুজন মিয়া ওরফে সোহেল (২৮), একই উপজেলার রামকান্তপুর স্কুলপাড়া এলাকার মো. ওসমান প্রামাণিকের ছেলে মো. আব্দুল করিম (২৮), মৃত আব্দুল খালেক মণ্ডলের ছেলে মো. আব্দুল মালেক (২৭) ও মৃত ছাইদার প্রামাণিকের ছেলে মো. আশরাফুল প্রামাণিক (৩৫)। ওয়ান শুটার গানসহ আটক আবু হাসেম একই উপজেলার ভেংড়ী গ্রামের আবু বক্কার সিদ্দিকের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, গুলিবিদ্ধ ভিকটিম উল্লাপাড়া উপজেলার ভেলাবাড়ী তেঁতুলিয়া গ্রামের তারিকুল ইসলাম মোবারক মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে বিভিন্ন গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় তার ব্যাগে পাঁচ লাখ টাকা ছিল। তিনি শ্রীকোলা মোড় পার হয়ে চৌকিদহ ব্রিজ এলাকায় গেলে পেছন থেকে অনুসরণ করা কয়েকজন যুবক তার পথরোধ করে ব্যাগের টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারিকুল ইসলাম মোবারক বাধা দিলে তারা প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে ভিকটিমের বাম পায়ে গুলি করে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় উল্লাপাড়া থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার পর সিরাজগঞ্জের জন্য তাড়াশ, বেলকুচি ও উল্লাপাড়া এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি বিদেশি রিভলবার, ছয় রাউন্ড গুলি, দুটি গুলির খোসা ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এছাড়াও গ্রেফতার যুবকদের দেওয়া তথ্যে একটি ওয়ান শুটারগানসহ আবু হাসেম নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করাই তাদের পেশা। ঘটনার ৩/৪ দিন আগে সুজনের পরিকল্পনায় ভিকটিম মোবারকের টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সুজনের নেতৃত্বে ৭ জনের একটি দল বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে ভিকটিম তারিকুল ইসলাম মোবারককে অনুসরণ করে। পরিকল্পনা মাফিক ভিকটিম চৌকিদহ ব্রিজের কাছে এলে ডাকাতি সংঘঠিত করে পালিয়ে যায় তারা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতার সুজনের নামে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানায় ৭টি মামলা রয়েছে। অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধেও চুরি-ডাকাতির অভিযোগে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।