চ্যাম্পিয়ন! আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন! লিওনেল মেসি চ্যাম্পিয়ন! একনিষ্ঠ ভক্তদের মতো করেই বলতে হয়, গোটা আকাশটাই যেন এবার আর্জেন্টিনার। আলবিসেলেস্তাদের রাজধানী বুয়েন্স আয়ারসের রাস্তায় দাঁড়িয়ে এমনটাই মনে হবে যে কারো। যে দিকে চোখ যায় শুধুই মানুষ আর মানুষ। যাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে ‘চ্যাম্পিয়ন, উই আর চ্যাম্পিয়ন’ আর গায়ে বিজয়ী প্রতীক আকাশী-নীল জার্সি, মাথায় টুপি আর হাতে প্রিয় পতাকা!
এমনটাই তো হওয়ার কথা, এক-দুই দিন নয়, কয়েক মাস নয়, হাতেগোনা কিছু বছর নয়; ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের রঙ আজ আকাশী-নীল, তিন যুগ পর বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পুনরুদ্ধার করলো আলবিসেলেস্তারা। আবারো হারানো সিংহাসন ফিরে পেল তারা। আর্জেন্টিনাই এখন বিশ্ব ফুটবলের রাজা।
এই সাফল্য উদযাপন করতে রাস্তায় নেমে আসে লাখো লাখো মানুষ। নেচে গেয়ে তারা স্মরণীয় করে রাখে রঙিন এই মাহেন্দ্রক্ষণ। আর অপেক্ষায় স্বপ্নের সোনার ট্রফি নিয়ে কখন ঘরে ফিরবেন চ্যাম্পিয়নরা!
আরব সাগর পাড়ে যে কীর্তি গড়েছেন মেসিরা, তা শুধুই লুসাইল স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৮২ হাজার সমর্থকের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, সেই উল্লাস মরুভূমির বুক পেরিয়ে পৌঁছে গেছে সুদূর আর্জেন্টিনায়। লুসাইলে মেসি আর স্বপ্ন পূরণের সম্মুখ সাক্ষীদের গগনবিদারী চিৎকার পৌঁছে গেছে বুয়েন্স আইরেসের আকাশে বাতাসে। কাতার থেকে বুয়েন্স আইরেসের দূরত্বটা ১৩ হাজার ৮০৯ কিলোমিটার। দূরত্বটা বাধা হয়নি আর্জেন্টাইনদের কাছে। আনন্দের ক্ষণ উপভোগে বুয়েন্স আইরেস ততক্ষণে উৎসবের নগরী!
বাঁধ ভাঙা উল্লাস আর উন্মাদনার উত্তাল স্রোতে মুখরিত উৎসবের নগরী বুয়েন্স আয়ারস যেন জনসমুদ্র। নিঃসন্দেহে যেই অনুভূতি প্রকাশ করার মতো নয়। তবুও কথা বলেছেন কয়েকজন, জানিয়েছেন তাদের স্বপ্ন পূরণের কথা।
৪৬ বছর বয়সী দিয়েগো অ্যাবুর্গেইলি বলেন, ‘এটি একটি অবিশ্বাস্য খেলা ছিল, মাঝে মাঝে ছিল রোমাঞ্চও। এ দলটি কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো মানুষকে তাদের প্রেমে ফেলেছে।’
আরেক আর্জেন্টাইন বলেন, ‘আমি আমার আবেগ ধরে রাখতে পারছি না। মেসিদের এমন জয়ে আমি খুবই গর্বিত। একজন মেসি আমাদের দেশের এত বড় অর্জনের কাণ্ডারি। ৩৬ বছর পর এমন আনন্দ উদযাপনের মুহূর্ত পেয়ে আমরা খুবই খুশি।’
রোজেলিও ভাজকেজ নামের একজন বলেন, ‘আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে জিততে পারতাম, কিন্তু আমরা বরাবরের মতোই কষ্ট পেতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু এইটা সত্য যে কষ্ট জয়কে আরো উপভোগ্য করে তোলে।’