গাজীপুরে আগুনে পুড়ে এক দম্পতি’র মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মহানগরীর কোনাবাড়ীর উত্তর জরুন (সিকদার পাড়া) এলাকার শুকুর শিকদারের ভাড়া বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- নীলফামারীর ডিমলা থানাধীন ডাঙ্গারহাট গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবু সুফিয়ান (৪০) এবং তার স্ত্রী একই জেলার ডোমার থানাধীন ডুগডুগি বড়গাছা গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে নাসরিন আক্তার (৩৫)।
বাড়ির মালিক শুকুর শিকদার নিহত নাসরিনের ভাই নজরুল ইসলামের বরাত দিয়ে জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন উত্তর জরুন (সিকদার পাড়া) এলাকার শুকুর শিকদারের ছয়তলা ভবনের বাড়ির নীচতলায় ভাড়া থাকতেন সুফিয়ান ও নাসরিন দম্পতি। তাদের মধ্যে আবু সুফিয়ান রাজমিস্ত্রির সহকারী এবং তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার স্থানীয় নয়াপাড়া এলাকার তাসমিয়া পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করতেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন এ দম্পতি। শনিবার ভোড় সাড়ে ৫টার দিকে তাদের ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে বাড়ির মালিককে খবর দেয় নিরাপত্তা প্রহরী আল-আমীন। বাড়ির মালিক ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় কক্ষের ভেতর থেকে লাগানো স্টিলের দরজা শাবল দিয়ে ভেঙে ঘরে ভিতরে প্রবেশ করে। তারা কক্ষের ভিতরে ফ্লোরে পড়ে থাকা স্বামীর লাশ এবং খাটের ওপর থেকে স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেন।
তিনি আরো জানান, তাদের মধ্যে প্রায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। তবে কখন, কিভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেরনি। ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক বিরোধ থেকেই তারা নিজেরা গায়ে আগুন লাগিয়ে আতœহত্যা করে থাকতে পারে।
নজরুল ইসলাম জানান, সুফিয়ান ও নাসরিন দম্পতির একমাত্র ছেলে নাফিস স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র। শুক্রবার মাদ্রাসা থেকে বাসায় এসেছিল মা-বাবাকে দেখতে। দুপুরে মায়ের হাতে খাবার খেয়ে বিকেলে মাদ্রাসায় ফিরে গিয়েছিল সে। অথচ শনিবার মাদ্রাসা থেকে এসে দেখলো মা-বাবা দুজনই আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।
জিএমপি’র কোনাবাড়ী থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন জানান, তাদের মৃত্যু বিষয়টি রহস্যজনক। অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি কেন ঘটল অথবা অন্য কোন চক্রান্ত বা নাশকতা রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এব্যাপারে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক (ডিএডি) আব্দুল্লাহ আল আরিফিন বলেন, কোনাবাড়ী থানার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ডিবিবিএল ফায়ার সার্ভিসের ঘটনাস্থলে গিয়েছে।