আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বাংলাদেশকে আর কখনো হাওয়া ভবন খাওয়া ভবন করতে দিব না। আওয়ামী লীগ জনগণের দল। আওয়ামী লীগকে জনগণের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অস্ত্র জমা দিয়েছি, ট্রেনিং জমা দেইনি। প্রয়োজনে দেশবাসীকে নিয়ে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিব। স্বাধীনতা বিরোধীদের আবারও পরাজিত করব।
জাতীয় নেতা এম মনসুর আলী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও ৩ নভেম্বর উপলক্ষে আজ বিকেলে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি একথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেফাজ উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদার, সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সূর্য, সিরাজগঞ্জ -১ আসনের এমপি প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, পৌর মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার, যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব, ছাত্রলীগের সভাপতি সায়েম তালুকদার প্রমুখ।
স্মরণ সভাটি রীতিমতো জনসভায় রূপ নেয়।
অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করা হয়। পরে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্মরণ সভাটি রীতিমতো জনসভায় রূপ নেয়। উপজেলা পরিষদের মাঠ ছাড়াও রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শোনেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য বারবার চেষ্টা চালিয়েছে। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকে হত্যা করেছিল। পাকিস্তানের আর্মিরা যে গ্রেনেড ব্যবহার করে, ২১ আগস্ট সে গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছিল। রক্তের গঙ্গা বইয়েছিল ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। আমাদের নেত্রীকে লক্ষ্য করে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করেছে। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে? আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। এই দলকে কেউ নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি।
আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের হৃদয়ের সংগঠন। এই সংগঠনকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা যাবে না। বাংলাদেশের আর আফগানিস্তান-পাকিস্তান বানাতে দেওয়া হবে না। জঙ্গিবাদ-বাংলা ভাইয়ের উত্থান হতে দেওয়া হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। তাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। এ জন্য স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, আজকে ১/১১। মির্জা ফখরুলরা গণতন্ত্রের কথা বলেন। কেন ১/১১ সৃষ্টি হলো? এর জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী না বিএনপি? গণতন্ত্র হত্যার জন্য বিএনপি দায়ী।
ফখরুলের নেতা তারেক রহমান দায়ী। বিএনপি ভোট ডাকাতির কথা বলে। ভোট ডাকাত বিএনপি। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হ্যাঁ-না ভোট করে ভোট ডাকাতি করেছে। সেনা আইন ভঙ্গ করে রাষ্ট্রপতি হয়েছে, দল গঠন করেছে। জনগণের তোপের মুখে বারবার পদত্যাগ করেছে। সেই দল বিএনপি। আজকের বিএনপির জন্য আন্দোলন করেন?
বিএনপির বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির সংবাদ সম্মেলনে বললেন- হাওয়া ভবনের কমিশনের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছেন না। কানসাটের বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করার কারণে মানুষকে হত্যা করেছিলেন। লজ্জা করে না? মানুষের এক কান কাটার মতো কথা বলেন, এবার দেশের মানুষ দুই কান কেটে দেবে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র তাদের জন্য নয়, যারা গণতন্ত্র কে হত্যা করে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বর স্বাধীনতা বিরোধীদের পরাজিত করব।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, স্বাধীনতার পর চারটি বড় সংকট হয়েছে। তারমধ্যে ৭৫-এর ১৫ আগস্ট, ১/১১, করোনা মহামারি এবং বর্তমানে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সংকট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা সংকট কাটিয়ে উঠছে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে।
প্রকৌশলী তানভির শাকিল জয় এমপি বলেন, ৩ নভেম্বর জেলহত্যা শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, এটা ছিল জাতির পিতার বাংলাদেশকে পিছনের দিকে ঠেলে দেওয়া। জাতীয় চার নেতা জেলখানায় প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন তারা ছিলেন জীবনে-মরণে বঙ্গবন্ধুর সহচর।