গাজীপুরে একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে সিলিন্ডারে গ্যাস ফিলিং করার সময় কাভার্ড ভ্যানের ভেতরে থাকা সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৫জন দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় বেঁচে থাকা সর্বশেষ ব্যক্তি আনোয়ারুল ইসলাম (৩০) মারা গেছেন। রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ওই ঘটনায় দগ্ধ পাঁচজনের সবার একে একে মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আনোারুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানার আয়জুল ইসলামের ছেলে। তিনি গাজীপুরের গাছা এলাকার ফাহিম বয়লার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করতেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক এসএম আইউব হোসেন জানান, রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ারুল ইসলাম (৩০) মারা গেছেন। তার শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তার শ্বাসনালীও পুড়ে গিয়েছিল। এর আগে একই ঘটনায় দগ্ধ ৫জনের মধ্যে ১৪ অক্টোবর সকালে কাভার্ডভ্যানের শ্রমিক আতিকুল ইসলাম মিঠু (২৭), ১৭ অক্টোবর সকালে কাভার্ডভ্যান চালক পারভেজ মিয়া (৩৩), ১৮ অক্টোবর সকালে আল আমিন (২৫) এবং ২০ অক্টোবর আমান টেক্সটাইলের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম টুটুল (২৫) এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পর্যায়ক্রমে মারা যান।
জিএমপি’র গাছা থানার ওসি কর্মকর্তা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যার পর গাজীপুর মহানগরীর বড়বাড়ী এলাকার হাজী ওয়াহেদ আলী সরকার সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে মেসার্স জুনাইদ এন্টার প্রাইজের একটি কাভার্ডভ্যানের ভেতরে থাকা প্রায় একশ’ সিলিন্ডারে গ্যাস ফিলিং করা হচ্ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ মেশিনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ ও সংরক্ষণ করার সময় একটি সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে কাভার্ডভ্যানের আশেপাশে থাকা আল আমিন (২৫), পারভেজ (৩৩), আনোয়ারুল ইসলাম (৩০), সিরাজুল ইসলাম টুটুল (২৫) ও আতিকুল ইসলাম মিঠু (২৭) সহ ৫জন আগুনে দগ্ধ হন। তাদেরকে প্রথমে স্থানীয় তায়েরুন্নেছা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়।
তিনি আরো বলেন, ফিলিং ষ্টেশন কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ক্রুটিযুক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ যন্ত্রাংশ ব্যবহার, ক্রুটিযুক্ত ডিসপেন্সার দ্বারা ক্রুটিযুক্ত গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় গত ২৬ অক্টোবর মামলা রুজু হয়েছে। মামলায় হাজী ওয়াহেদ আলী ফিলিং ষ্টেশনের চেয়ারম্যান সালেহীন ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুনুর রহমান, পরিচালক মোজাম্মেল হক সরকার, শাহরিয়ার মাহমুদ সিয়াম, নুসাইবা আলীম ঐশি, উষা শিখা সিলিন্ডারবাহী কাভার্ড ভ্যানের (চট্ট-মেট্টো-ট-১১-২২৫৭) মালিকসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামী করা হয়েছে।