গাজীপুরের বড়বাড়ী এলাকায় হাজী ওয়াহেদ আলী ফিলিং ষ্টেশনে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে গাছা থানায় মামলা করেছে পুলিশ। বুধবার থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল্লাহ ইবনে সাইদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন জিএমপি’র গাছা থানার ওসি ইব্রাহীম হোসেন।
মামলায় হাজী ওয়াহেদ আলী ফিলিং ষ্টেশনের চেয়ারম্যান সালেহীন ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুনুর রহমান, পরিচালক মোজাম্মেল হক সরকার, শাহরিয়ার মাহমুদ সিয়াম, নুসাইবা আলীম ঐশি, উষা শিখা সিলিন্ডারবাহী কাভার্ড ভ্যানের (চট্ট-মেট্টো-ট-১১-২২৫৭) মালিকসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামী করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন বড়বাড়ী এলাকায় হাজী ওয়াহেদ আলী ফিলিং স্টেশনে ঝূঁকিপূর্ণ মেশিনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ ও সংরক্ষণ করা কালে কাভার্ড ভ্যানবাহী সিলিন্ডার হতে বিস্ফোরণ ঘটলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৪জন মারা যান। নিহতরা হলেন, গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শ্রীরামকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আল-আমিন (২৪), ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার মিত্রবাটি গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (২৮), মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দক্ষিণ সুলাইন গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে মিঠু (২৬), চট্রগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার পশ্চিম দেওয়ান নগর নাজিম উদ্দিনের ছেলে পারভেজ (৩১)। নিহতদের সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান। এঘটনায় অপর দগ্ধ সিরাজুল ইসলাম টুটুল হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গাছা থানার ওসি কর্মকর্তা ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ফিলিং ষ্টেশন কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ক্রুটিযুক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ যন্ত্রাংশ ব্যবহার, ক্রুটিযুক্ত ডিসপেন্সার দ্বারা ক্রুটিযুক্ত গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।
প্রসঙ্গতঃ গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যার পর গাজীপুর মহানগরীর বড়বাড়ী এলাকার হাজী ওয়াহেদ আলী সরকার সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে মেসার্স জুনাইদ এন্টার প্রাইজের একটি কাভার্ডভ্যানের ভেতরে থাকা প্রায় একশ’ সিলিন্ডারে গ্যাস ফিলিং করার সময় একটি সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে কাভার্ডভ্যানে ও আশেপাশে থাকা আল আমিন (২৫), পারভেজ (৩৩), আনোয়ারুল ইসলাম (২৭), সিরাজুল ইসলাম টুটুল (২৫) ও আতিকুল ইসলাম মিঠু (২৭) সহ ৫জন দগ্ধ হন। তাদেরকে প্রথমে স্থানীয় তায়েরুন্নেছা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। ওই ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে ৪জন পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।