হোবার্টে বিশ্বকাপের সুপার-১২ আসরে আজ বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায়। প্রায় ১৫ বছর পর টি২০ বিশ্বকাপে জয়টা ভক্তদের মুখে হাসি এনেছে। আজ আফিফের ব্যাট (৩৮ রান) আর তাসকিনের বল (২৫ রানে ৪ উইকেট) টাইগারদের ১ বছর পর জয়ের স্বাদ দিয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে টি-২০ বিশ্বকাপ আসরে মুল পর্বে ২০০৭ সালের পর ২০২২ সালে সফলতার মুখ দেখল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।
তবে শুরুটা ভাল করতে পারেনি সাকিব বাহিনী। টস হেরে ব্যাট হাতে ওপেনিং জুটি দ্রুত ফেরত যায়। আর মিডল অর্ডারের দুই কান্ডারি সাকিব – লিটন তো সুপার ফ্লপ। আফিফের ব্যাটে ভর দিয়ে ২০ ওভারে সংগ্রহ কোন ক্রমে ১৪৪/৮। জবাব দিতে নেমে নেদারল্যান্ড ১০ রানে হেরে গেছে। অলরাউট ১৩৫ রানে।
বাংলাদেশ দলের একটা নেতিবাচক মানসিকতা হলো টস হেরে গেলে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এটা বহু ম্যাচে দেখা গেছে কারণ টস জেতাটা জরুরী, কারণ এতে উইকেটের ভূমিকা থাকে বিশাল।
সেটা আজ হয়নি, সাকিবরাটস হেরেও রান পেয়েছে। ওপেনার শান্ত-সৌম্য জুটি ৪৩ রান উপহার দেয়। শান্ত ২০ বলে ২৫ রানে ফেরত যার পর সৌম্যও টিকলেন না। সৌম্য ফেরত গেলেন ১৪-তে ১৪ রানে।
এরপর নেদারল্যান্ড দলের দুই বোলার ব্যান বিক ৯ রানে থাকা লিটনকে আর শারিজ আহমেদ রানে থাকা সাকিবকে সাঁজ ঘরের পথ দেখিয়ে দিলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে টাইগার ড্রেসিং রুমে। কারণ দলীয় স্কোর
তখন ৬৩/৪ (৯.১ ওভার)।
এবার হাল ধরলেন মিডল অর্ডারের কান্ডারি আফিফ হোসেন। পাশে থাকা ইয়াসির আলী সঙ্গ দিতে পারলেন না আফিফকে। ৩ রানে ফেরত গেলেন ইয়াসির আলী। আফিফ এবার পাশে পেলেন সহঅধিনায়ক
নুরুল হাসানকে। কিন্তু তিনি টেস্ট খেললেন, ১৮ বলে মাত্র ১৩ রান! কিন্তু আফিফ-মোসাদ্দেত জুটি শেষ দিকে কার্যকরী ভূমিকা পালনে সফল হয়েছে। মোসাদ্দেক ১২ বলে ২০ রান আর আফিফ ২৭ বলে ২ চার আর ২ ছয়ে ৩৮ বাংলাদেশকে খানিকটা নিরাপদ করেছে।
১৪৫ রানের জবাব দিতে নামা নেদারল্যান্ড-র ব্যাটারদের জন্য টাইগার বোলিং মোকাবেলা করা সহজ ছিল না। ইনিংসের প্রথম বলেই পেসার তাসকিন ওপেনার সিং-কে ক্যাচ বানান। এর পরে ওভারে ওয়ান ডাউনে নামা
বেস ডি-কে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন। আর সাকিব-সোহান দুই জনে দুই রান আউট করলে স্কোর ১৫ রানেই ৪ উইকেটের পতন হয়ে যায়।
তবে মিডল অর্ডারে কুলিন টিকে রইলেন। তিনি কেবল আসা-যাওয়া মিছিল দেখলেন। স্কোর তখন ৬৬/৬ আর ওভার শেষ ১২.৪। এরপরই বৃস্টির হানা, তবে বেশি সময় ছিল না বৃষ্টি। তবে ১২.৫ ওভারে ৬৬/৫ বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই খেলা আবারো মাঠে গড়ায়।
১৬ ওভারে ৯২/৭, ২৪ বলে দরকার ৫৩ রান। তখন কুলিন মারকুটে রুপে নিজেকে জাহির করতে চেষ্টা করছেন। অনেকটা করেছেনও, ৪৬ বলে ৫৮ রানও করে ফেলেছেন। বাংলাদেশ শংঙ্কায়, তখন তাসিকন কুলিনকে ফেরত পাঠাতে না পারলেও বোলার শারিজ আহমেদকে ক্যাচ বানালেন। একই ওভারে তাসকিন এবার ৪৮ বলে ৬২ রানে থাকা কুলিনকে সৈকতের হাতে বিশাল ক্যাচে পরিণত করলে বাংলাদেশ শিবিরে বুক থেকে পাথর নেমে যায়।
শেষ অবদি নেদারল্যান্ড অলআউট থেকে বাঁচতে চেষ্টা করে। ১৮ ওভারে প্রথম বলেই বিশাল ছক্কা, ২ বলে ১২ রান! ২টি ছক্কা, মারতে পারলেই তো বাংলাদেশ হেরে যায়! কিন্তু এবার দুই রানে বেশি হয়নি। আর পরের বলে বিশাল ছক্কা মারার চেষ্টা। ১ বলে দরকার ছিল ১১ রান, কিন্তু ক্যাচ। অলআউট নেদারল্যান্ড ২০ ওভার, ১৩৫।