ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে স্বামী মুসা মোল্যার ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নূপুর বেগম নিহত হয়েছেন। এ সময় তার মেয়ে ফারিয়া (১২) আহত হয়।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের দাবি স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ।

এলাকাবাসী ও থানা সূত্রে জানা যায়, ১৩ বছর আগে মধ্যেরগাতি এলাকার কাওসার মোল্যার ছেলে মুসা মোল্যার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে থেকে বিয়ে হয় নূপুরের। ফারিয়া নামে তাদের বারো বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। বছরখানেক আগে পার্শ্ববর্তী ছোলনা গ্রামের মো. রেজাউল মোল্যার ছেলে নাঈম মোল্যার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে নূপুর বেগম। এরমধ্যে কয়েকবার সে স্বামীর ঘর ছেড়ে প্রেমিক নাঈমের বাড়িতে গিয়ে উঠেন। সেখান থেকে পরিবারের সমঝোতায় স্বামীর ঘরে ফিরে এলে প্রেমিক নাঈম নূপুরকে স্ত্রীর দাবি করেন। এ বিষয়ে গত ৭ অক্টোবর শুক্রবার একটি গ্রাম্য সালিশ হয়।

সালিশে শরীয়া আইন মোতাবেক তিন মাস ইদ্দদ পালন শেষে মেয়ের ইচ্ছানুযায়ী পুনরায় স্বামী নির্বাচনের অধিকার দিয়ে নিহত নূপুরকে মধ্যেরগাতি গ্রামে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়। সেখানে স্বামীর দাবিদার দুইজনের কেউ নূপুরের সঙ্গে দেখা করতে পারবে না বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সালিশের দুই সপ্তাহের মাথায় গত বৃহস্পতিবার রাতে নূপুরের বাড়িতে হাজির হয় প্রেমিক নাঈম। এ সময় নিহতের মেয়ে ফারিয়া তার বাবা মুসাকে ফোন করে ঘটনা জানালে প্রাক্তন স্বামী মুসা সেখানে হাজির হলে পালিয়ে যায় প্রেমিক নাঈম।

এ সময় নূপুরকে সামনে পেয়ে রাগের বশবর্তী হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে স্বামী মুসা মোল্যা (৩২) পালিয়ে যান। পরে পরিবারের লোকজন নূপুরকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নূপুর বেগম।

এ সময় বাবাকে আটকাতে গিয়ে কোপ লেগে আহত হয় নূপুরের মেয়ে ফারিয়া।

বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।