গাজীপুরে ভারত থেকে আনা ঔষধের মূল্য নিয়ে বাকবিতন্ডার জেরে এক ট্র্যাভেল ব্যবসায়ীকে মারধর করে ড্রেনে ফেলে খুন করেছে কয়েক ব্যক্তি। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার প্রায় ১৫ মাস পর এ রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জামালপুরের মেলান্দহ থানার শাহজাতপুর খানপাড়া এলাকার মৃত সরাফত আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৪) ও গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন দিঘীরচালা এলাকার মৃত বারেক শেখের ছেলে ফারুক আহমেদ (৫২)।
পিবিআই’র পুলিশ সুপার জানান, গাজীপুরে ট্র্যাভেলের ব্যবসা করতেন নড়াইলের নড়াগাতি থানার বাইসোনা এলাকার মৃত আবুল কাশেম লস্করের ছেলে হেদায়েত লস্কর (৪২)। গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন টানকড্ডা গোলটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় স্বপরিবারে বসবাস করতেন হেদায়েত। তিনি ট্যাভেল ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্নজনের চাহিদা অনুযায়ী ভারত থেকে ঔষধ এনে সরবরাহ ও বিক্রি করতেন। গত বছরের ২৫ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় তারিকুজ্জামান ওরফে তারিফের জন্য ভারত থেকে আনা কিছু ঔষধ পৌছে দেয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন হেদায়েত। পথে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের তাকওয়া ফার্মেসীর সামনে ফুটপাতের উপর দেখা হয় তাদের। এসময় ঔষধের মূল্য প্রায় ৩ হাজার টাকা বেশী দাবী করার অভিযোগে তাদের মাঝে বাক বিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে হেদায়েতকে মারধর করতে থাকেন তারিকুজ্জামান। তাদের ঝগড়া দেখে ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসেন তারিকের শ্বশুর ফারুক আহমেদ ও গাড়ির ড্রাইভার আনোয়ার হোসেন। এসময় তারাও কয়েকদফা হেদায়েতকে মারপিট করে লাথি দিয়ে পাশের ড্রেনে ফেলে দেন। খবর পেয়ে স্বজনরা ঘটনাস্থল থেকে হেদায়েত লস্করকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী যুথী আক্তার বাদী হয়ে একজনকে আসামী করে বাসন থানায় মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, বাসন থানা পুলিশ তদন্ত শেষে এজহার নামীয় একমাত্র আসামীকে মামলার দায় থেকে অব্যহতির আবেদন করে গত বছরের ২৭ অক্টোবর আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। মামলার বাদী এতে না রাজী দিলে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে নির্দেশ দেন। এরপ্রেক্ষিতে
পিবিআই’র তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ফারুক আহমেদ (৫২) ও আনোয়ার হোসেনকে (৩৪) সোমবার ভোর রাতে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত আনোয়ার নিজেকে জড়িয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামীদের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এরপ্রেক্ষিতে ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় ১৫ মাস পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।