গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গলায় টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে টনসিলের পরিবর্তে শ্বাসনালী কেটে ফেলায় প্রবাসী এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় আমরাইদ পপুলার ডিজিটাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (সাবেক আমরাইদ সেবা হাসপাতাল) এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকেলে পুলিশ নিহত ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন সেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যেও তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে।
নিহত ওই যুবকের নাম আলমগীর হোসেন (৩২)। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভখাঁ নামা পাড়া এলাকার সবজি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ওরফে আনারের ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের চাচাতো ভাই জাকির হোসেন জানান, দুবাই ফেরত আলমগীর হোসেন শুক্রবার সকালে টনসিল অস্ত্রোপাচারের জন্য কাপাসিয়ার আমরাইদ পপুলার ডিজিটাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (সাবেক আমরাইদ সেবা হাসপাতাল) ভর্তি হন। বেলা ১১ টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। দীর্ঘ সময়েও তার অপারেশন শেষ না হওয়ায় স্বজনরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আলমগীরের চিকিৎসার খোঁজ জানতে চান। এসময় স্বজনরা জানতে পারেন কর্তব্যরত চিকিৎসক অপারেশনের সময় ভুল বশতঃ শ্বাসনালী কেটে ফেলায় রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। নানাভাবে চেষ্টা করেও রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। আলমগীরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। পরে নিহতের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন স্বজনরা। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহল রাতভর চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার এলাকাবাসী নিহতের লাশ নিয়ে এলাকায় বিক্ষোভ করেন। নিহত আলমগীর হোসেনের ৩ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। তার স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
হাসপাতালের মালিক আবুল হোসেন জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিষয়ের ডাক্তার এটিএম ফয়সাল এ অপারেশন করেছেন। ঘটনার পর থেকে তার মোবাইল বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রহমান জানান, এ ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা. শারফদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর এর মাধ্যমে খবর পেয়ে দুপুরে কাপাসিয়া থানা পুলিশ নিহতের লাশ তার বাড়ি গিয়ে বিক্ষোভরত এলাকাবাসীর কাছ থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আনে। এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ না রাখতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্বজনেরা অভিযোগ দিলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।