মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক বলেছেন, জিয়াউর রহমান দেশে হত্যার রাজনীতি চালু করেছিলেন। তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি বিমান বাহিনীর সাতশ’রও বেশী সদস্যকে খুন ও গুম করেছিলেন। আদালতের রায় ঘোষণার আগেই তিনি অনেক সৈনিককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছেন। তার দালিলিক প্রমাণ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
শনিবার তিনি গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। স্থানীয় কোনাবাড়ি ডিগ্রী কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, দলের কেন্দ্রীয় আনোয়ার হোসেন, শাহাবুদ্দিন ফরাজী, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াসসহ প্রমূখ। এতে সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক শেখ মু: আসাদ উল্লাহ।
প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, দেশকে অকার্যকর করতে আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বিএনপি আবোল তাবোল কথা বলছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কলাগাছ নয়, পিঠ ঘষতে আসলে আরাম লাগবে। আওয়ামী লীগ হলো মান্দার গাছ, কেউ পিঠ ঘষতে আসলে তারই চামড়া ছুলে যাবে। তাই বুঝে শুনে কথা বলবেন। তিনি বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তারা বিদেশী প্রভুদের ইঙ্গিতে আজকে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এটা যারা সহ্য করতে পারে না। তারা আজকে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম এমপি বলেন, বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাবা ১৯৭১ সালে কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। মির্জা ফখরুল নিজেও ’৭১এ ভারতে গিয়েছিলেন, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা তাকে বিশ্বাস করেন নাই। তাকে আটক রাখা হয়েছিল, তার গতিবিধি লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। তাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ বা ট্রেনিং কিছুতেই অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয় নাই। ১৬ ডিসেম্বরের পর তার পিতা দেশে থাকতে পারেন নাই, তিনি ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর তিনি দেশে এসেছিলেন।
তিনি বলেন, গত পরশু চট্রগ্রামে বিএনপি সমাবেশ করেছে। ওই সমাবেশে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে একাত্তরের রাজাকারদের শ্লোগান দিয়েছে। আর বিএনপি’র সকল নেতারা সেই শ্লোগানে অংশ নিয়েছেন।
মির্জা আজম আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করছে একাত্তরের রাজাকারেরা। অথচ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আজ উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে। যেখানে ২০০৯ সালে বাংলাদেশে অর্ধেকেরও বেশী কুঁড়ে ঘর ও ছনের ঘর ছিল, সেখানে জাদুঘরে রাখার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও একটিও কুঁড়ে ঘর পাওয়া যাবে না।
কোনাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনে সভাপতি পদে তিনজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৪জন প্রার্থীদের নাম জমা দেওয়া হয়।