গাজীপুরে পুলিশ পরিচয়ে এটিএম বুথে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা রুবেলসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার জিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আলমীর হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার ফটিয়ামারী এলাকার মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রুবেল রানা (২৬), ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু শোরাতলা এলাকার জব্বার মালিথার ছেলে তুষার ইসলাম (৩৭), বরিশালের আগৈলঝরা থানার অশোকসেন এলাকার জাহাঙ্গীর মোল্লার ছেলে সবুজ মোল্লা (৩৪) ও পঞ্চগড়ের ভোদা থানার দিঘলগ্রামের জহিরুল হকের ছেলে খাইরুল ইসলাম (৩১)।

জিএমপি’র ওই কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরীরর সালনা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আন্ডারপাসের নীচ থেকে পুলিশের এসআই পরিচয়দানকারী রুবেল রানাকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়া থানা এলাকা হতে তুষার ইসলাম, সবুজ মোল্লা ও খাইরুল ইসলামকে আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃত রুবেলের কাছ থেকে একটি ওয়াকিটকি, কভারসহ একটি খেলনা পিস্তল, ২টি এ্যান্টিনা, পুলিশের কোমরের বেল্ট, বিভিন্ন ব্যাংকের ৬টি এটিএম কার্ড, একটি মোবাইলফোন ও মোবাইলের ৭টি সিম, পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি, বাংলাদেশ পুলিশ লেখা নোটবুক, কম্পিউটার, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের দাখিল পরীক্ষার দুইটি জাল সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও তুষারের কাছ থেকে দুইটি হার্ড ডিস্ক ও সিপিও উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃতরা প্রতারক চক্রের সদস্য। এ চক্রের সদস্যরা যেসব এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন গাজীপুরে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে দেয়া হয় সেসব এলাকাকে প্রথমে টার্গেট করতো। পরে তারা নির্দিষ্ট দিনে পুলিশ পরিচয়ে আইডি কার্ড ও ওয়াকিটকি সেট নিয়ে বিভিন্ন এটিএম বুথের সামনে অবস্থান করতো। শ্রমিকরা যখন বুথে প্রবেশ করে বেতনের টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করতো, তখন এ চক্রের সদস্যরা পুলিশ পরিচয়ে টাকা উত্তোলনে সহায়তা করার নামে সুকৌশলে পাস ওয়ার্ড জেনে নিত। এসময়ে শ্রমিকের আসল এটিএম কার্ড রেখে নকল কার্ড দিয়ে দিত। পরে একাউন্টে টাকা আসেনি বলে শ্রমিককে বুথ থেকে বিদায় দিয়ে শ্রমিকের কাছ থেকে বদলে রাখা আসল কার্ড দিয়ে সমুদয় টাকা উঠিয়ে আত্মসাৎ করে আসছিল। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ভয় ভীতি দেখাতো তারা। দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রের সদস্যরা এভাবে প্রতারণা করে আসছিল বলে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে।

তিনি জানান, প্রতারক চক্রের মূল হোতা রুবেল রানা পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে চারটি বিয়ে করেছে। সে পুলিশের পোশাক পরিহিত নিজের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে শারীরিক মেলামেশা করতো। মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক মেলামেশার ছবি ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে আসছিল রুবেল। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।