মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, দেশে মিনিকেট নামে কোন চাল বিক্রি করা যাবে না। মিলে চাল বস্তাজাত করার সময় তাতে জাতের নাম লিখে দিতে হবে। কেউ যদি এর ব্যতয় করে সেক্ষেত্রে আমরা তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল এ্যাকশনে যাবো। ১৫/২০দিন আগে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার সম্প্রসারণ বিভাগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, গবেষকদের উদ্ভাবিত জাতগুলো যদি আমরা বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে আরও সুন্দরভাবে কো-অর্ডিনেশনের মাধ্যমে দ্রুত কৃষকদের পৌঁছে দিতে পারি তবে আগামী ৫/৬ বছরের মধ্যে আমাদের ফলন দ্বিগুণের কাছাকাছি চলে যাবে। এসময় তিনি উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে দ্রুত সম্প্রসারণ এবং অংশীজনদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানের তাগিদ দেন।
বুধবার তিনি গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সদর দপ্তরে কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষিসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে এসে এসব কথা বলেন।
দুপুরে ইনস্টিটিউটের অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম। এ সভায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম পিএএ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মকবুল হোসেন পিএএ, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত অবসরপ্রাপ্ত সচিব কামরুন নাহার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর নির্বাহী চেয়ারম্যান, ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। এছাড়াও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার এগ্রিকালচারের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ বক্তব্য রাখেন। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
সভায় কৃষি পণ্যের গ্লোবাল মার্কেটে প্রবেশ করতে হলে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উদ্ভাবিত প্রযুক্তির মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন চান কৃষিবিজ্ঞানী, গবেষক এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন। এজন্য সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত কার্যক্রম জরুরী বলে অভিমত তারা। সভাশেষে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাত প্রযুক্তি কিভাবে মাঠ পর্যায়ে দ্রুত পৌছে দেয়া যায় তা নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জানানো হয়, ফলনোত্তর সময় প্রতি বছর ২০ হাজার কোটি টাকার কৃষি পণ্য ক্ষতি হচ্ছে সংরক্ষণের অভাবে। এসব পণ্য সংরক্ষণের জন্য গামা রেডিয়েশন ব্যবহার করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে বিনা । বিভিন্ন উন্নত দেশে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা কৃষি পণ্য দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করেন এবং বিদেশে রপ্তানি করেন। আমাদের দেশে যদি এ প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায় তাহলে বিশ্ববাজারে কৃষি পণ্য রপ্তানি করা সহজ হবে। সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা জানান, রেডিয়েশনের এই পদ্ধতি ফল বা সবজিতে ব্যবহার করলে সেগুলো পঁচবে না, ফ্রেশ থাকবে, কালার এমনকি স্বাদেও কোন পরিবর্তন আসবে না। এ পদ্ধতি মাছ ও মাংসেও ব্যবহার করা যাবে। এই পদ্ধতি সম্প্রসারণে সরকারের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধান অতিথি মন্ত্রী পরিষদ সচিব।
এরআগে মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অন্যান্য সচিবদের সঙ্গে নিয়ে ব্রি ক্যাম্পাসে রাইস মিউজিয়াম পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি ব্রির উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ, হাইব্রিড রাইস বিভাগ, কৌলি সম্পদ ও বীজ বিভাগ, জীব প্রযুক্তি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ ও স্টল পরিদর্শণ করেন।
এসময় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও অন্যান্য বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনারবৃন্দ, বাংলদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক, কৃষিমন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার মহাপরিচালক ও পরিচালকবৃন্দ, প্রকল্প পরিচালক এটুআই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, পরিচালক কৃষি তথ্য সার্ভিস ও ডিএই’র সকল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকগণ, জিএমপি কমিশনার, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ব্রি’র বিভাগীয় প্রধানগণ এবং অন্যান্য বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।