গাজীপুরের শ্রীপুরে রিক্সাভ্যান চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করেছে স্থানীয় কয়েক যুবক। এ ঘটনায় রবিবার থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের নাম- রানা মিয়া (৩০)। তিনি শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের বাবা ও স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী শিপন মিয়ার পাঁচটি রিক্সা ভ্যান সম্প্রতি চুরি হয়। এসব রিক্সাভ্যান চুরি করার সন্দেহে রানা মিয়াকে শনিবার ভোর রাতে আটক করে মুলাইদ (পশ্চিম পাড়া) গ্রামের পিয়ার আলী কলেজের পেছনে নিয়ে যায় শিপন ও তার লোকজন। তাদের বেধড়ক পিটুনির একপর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে তিনটি ভ্যান চুরি করেছে বলে জানায় রানা মিয়া। এরপরও মন গলে নি যুবকদের। তারা রানাকে পেটাতে থাকে। এসময় রানার বাবাসহ স্থানীয়রা গুরুতর আহত রানা মিয়াকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে কুকতি মিনতি করে। কিন্তু তাদের অনুরোধকে উপেÿা করে যুবকরা তাকে পেটাতে থাকে। যুবকদের বেধড়ক পিটুনির একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রানা। এসময় রানার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাÿর রেখে তাকে ছেড়ে দেয় যুবকরা। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় গুরুতর আহত রানাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সেখানে থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। পরে ওই হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রানাকে সন্ধ্যায় মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরে সেখান থেকে নিহতের লাশ নিয়ে শ্রীপুর থানায় আসেন তার স্বজনেরা।
নিহতের বাবা আরো বলেন, আমি বারবার তাদের পায়ে ধরে ছেলেকে মাফ করে দেওয়ার কথা বললে তারা ছাড়েনি। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তারা আমার ছেলেকে নির্যাতন করে বুকের পাঁজর ও দুই হাত-পা ভেঙে ফেলে। তাদেও বেধড়ক পিটুনিতে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমার ছেলের শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ এমন জায়গা নেই যেখানে আঘাত করেনি। আমার ছেলেকে তারা হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি চাই।
শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে শিপন মিয়া (২৫), আকাশ মিয়া (২২) ও উজ্জ্বল মিয়া (২৫) এবং আবুল কাশেমের ছেলে ইমন (২৬)সহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।