ইউক্রেনে নতুন করে শক্তি প্রয়োগের ঘোষণায় নিজ দেশেই তীব্র রোষানলে পড়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রতিবাদ জানাতে রাজপথে নেমেছে লাখো মানুষ। বিক্ষোভে উত্তাল শহরের পর শহর। আন্দোলন দমনে মারমুখী পুতিন প্রশাসন। রাজধানী মস্কো, সেন্ট পিটার্সবার্গসহ বড় বড় শহরগুলোতে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে পুলিশ। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩শর বেশি মানুষকে আটবক করেছে প্রশাসন।
বেশ কিছুদিন ধরেই যুদ্ধের নতুন কৌশলের বিষয়ে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পিছু হটছে রুশ বাহিনী, চারদিকে যখন এমন খবরের ছড়াছড়ি তখনই ঘোষণা দিলেন, রিজার্ভ ফোর্স থেকে ৩ লাখ সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি ফ্রন্টলাইনের সেনাদের পাল্টে পাঠানো হবে নতুন ব্যাটালিয়ন। কিছুদিন আগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু হয় রুশ সেনাবাহিনীতে।
প্রেসিডেন্টের এমন ঘোষণা চরম অসন্তোষ ছড়ায় দেশজুড়ে। রাজধানী মস্কোসহ বিভিন্ন শহরে রাজপথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। আরও মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন পুতিন এমন অভিযোগ করেন, বন্দিবিরোধী নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনি। এক ভিডিওবার্তায় আন্দোলন জোরদারের আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, আগ্রাসন আর অযৌক্তিক যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে দিচ্ছে। যত বেশি সংখ্যক মানুষকে বিপদে ফেলা যায়, পুতিন সেই ব্যবস্থা করছেন। হাজার হাজার মানুষের গায়ে রক্তের দাগ লাগাতে চান তিনি। মৃত্যু আর ট্রাজেডির শিকার হতে হবে সাধারণ মানুষকে। এটা ভালো কিছু বয়ে আনবে না। তিনি নিজের ক্ষমতার পরিধি বাড়াতে প্রতিবেশি দেশে আক্রমণ করেছেন, মানুষ হত্যা করছেন।
আর এই বিক্ষোভকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়েছে রুশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মস্কোর হুঁশিয়ারি, রাস্তায় বিক্ষোভের পরিণতি হতে পারে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের জেল। সেনাবাহিনীর প্রতি অবমাননা ও গুজব ছড়ানোর মামলা হতে পারে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে রিজার্ভ ফোর্সের তিন লাখ সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেয়ার পরপরই দেশ ছাড়ছেন অনেক রুশ নাগরিক। সীমান্ত বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় আগেভাগেই দেশ ছাড়ছেন তারা। সরকার যুদ্ধে যেতে বাধ্য করতে পারে এই আতঙ্কেই মূলত দেশ ছাড়ছেন অনেকে।