প্রতারনার মাধ্যমে জাল সনদে ২৪ জন ভুয়া শিক্ষক নীলফামারী জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন বলে শনাক্ত হয়েছেন।তবে সনাক্ত হবার পরেও তারা রয়ে গেছেন বহাল তবিয়তেই।রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের জাল সনদে চাকরি নেওয়া শিক্ষকদের তালিকায় এ জেলার ২৪ জনের নাম পাওয়া গেছে।এরমধ্যে ১৯ শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে।আর বাকি ৫ জন ননএমপিওভুক্ত শিক্ষক।তারাও এমপিওভুক্তের জন্য আবেদন করেছে! মঙ্গলবার(২০ সেপ্টেম্বর)এক সুত্রে জানা যায়,শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ(ডিআইএ)রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের জাল সনদে চাকরিরত শিক্ষকদের প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তার মধ্যে জাল সনদধারী শিক্ষক আছেন ৪৪৩ জন।এর মধ্যে স্কুল-কলেজে কর্মরত ৩২৩ জন।মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে আছেন ১২০ জন।তাদের মধ্যে নীলফামারীর ২৪ শিক্ষকের নাম উঠে এসেছে।ডিআইএর তথ্যমতে, ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের ২৫ মে পর্যন্ত দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুদ্ধি অভিযানে ১ হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের শিক্ষাগত ও যোগ্যতার সনদ ভুয়া পেয়েছেন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ(ডিআইএ)।রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জাল সনদধারী শিক্ষক রয়েছেন ৪৪৩ জন।এ জন্য ওই সব শিক্ষককে দেওয়া বেতন-ভাতা ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করেছে।ডিআইএর প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী নীলফামারী জেলার জাল সনদধারী চাকুরি করা ২৪ জন শিক্ষকরা হলেন-নীলফামারী সদরের চাঁদের হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক রাদিফা বেগম,দুহুলি উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মোছা. ছাবিনা ইয়াছমিন ও মোছাঃ রওশন আক্তার।জলঢাকা উপজেলার জলঢাকা দ্বি-মুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক মুকুল হোসেন,বালাপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনাথ চন্দ্র রায়,মীরগঞ্জ হাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক আইয়ুব আলী।কিশোরীগঞ্জ উপজেলার চাঁদ খানা উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিপউটার শিক্ষক শিরিনা আক্তার,মাগুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক লতিফুজ্জামান,মনিকা রানী রায় ও ইংরেজি শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক।ডিমলা উপজেলার সোনাখুলী চাপানী সৈকত নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশরাফ হোসেন,জটুয়াখাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষক সাইফুর রহমান,ছাতনাই কলোনি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মফিজুর রহমান,খগাখড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক নাজিয়া আলম,তিস্তা কলেজের কম্পিউটার প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক,বালাপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক আনারুল হক,দক্ষিন কাকড়া সাইফুন সাইড নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম(সমাজ)।সৈয়দপুর উপজেলার সাতপাই উচ্চ বিদ্যালয়ের আজিজুল ইসলাম ও ধর্মশিক্ষক আব্দুল মতিন।তারা এমপিওভুক্ত শিক্ষক বলে জানা গেছে।এছাড়াও নন এমপিওভুক্ত তালিকায় রয়েছে নীলফামারী সদরের ছমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা প্রভাষক মোছা.তামান্না সুলতানা,ডোমার উপজেলার কেতকি বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক মোছা.আকলিমা বেগম,বামুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মো. জহুরুল হক,সৈয়দপুর উপজেলার লক্ষ্মণপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের জীব বিজ্ঞানের প্রভাষক মোছা.মেরিনা মান্নান ও সমাজ বিজ্ঞানের প্রভাষক মো. মজিবুর রহমান,ডিমলা উপজেলা জটুয়াখাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক আলমগীর রহমান।তারাও এমপিওভুক্তর জন্য আবেদন করেছে বলে জানা গেছে।পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (ডিআইএ)প্রফেসর অলিউল্লাহ মো. আজমতগীর বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আমাদের কাছে ১০ বছরের কতগুলো প্রতিষ্ঠান পরির্দশন এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার একটি হিসাব চেয়েছেন। আমরা উত্তরে কতগুলো প্রতিষ্ঠান পরির্দশন করেছি তা জানিয়েছি। ডিআইএর পক্ষ থেকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনে জাল সনদের বিষয় অনেক আছে। ওখানে বিশেষ করে এনটিআরসি সনদ, কম্পিউটার সনদ,গ্রন্থাগার সনদসহ এ রকম কিছু বিষয়ে ওই শিক্ষকদের সনদ ঠিক পাওয়া যায়নি।জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন,পরিদর্শন ও নিরীক্ষা বিভাগ(ডিআইএ)প্রদত্ত জাল সনদে শিক্ষকদের চাকরি নেওয়ার বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি।তবে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি।যদি নির্দেশনা আসে তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুজন মহিনুল, ক্রাইম রিপোর্টার।।