কয়েকদিন আগে ইউক্রেনের সেনারা খারকিভ থেকে রুশ সেনাদের হটিয়ে দেয়। তাদের চেষ্টায় স্বাধীন হয় খারকিভের ইজিয়ামও।

এরপর থেকে ইজিয়ামে রুশ সেনাদের বিভিন্ন অত্যাচারের অভিযোগ সামনে আসছে।

এর মাঝেই খারকিভে রুশ সেনাদের হাতে বন্দি থাকা শ্রীলংকার সাতজন নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে ঘটেছে ভয়ানক সব ঘটনা। তাদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে রুশ সেনারা।

দিলুজান পাথিনাজাকান নামে উদ্ধারকৃত এক শ্রীলংকান বলেছেন, আমরা ভেবেছিলাম আমরা কখনো বেঁচে ফিরব না।

দিলুজান জানিয়েছেন, তাকেসহ মোট সাত শ্রীলংকানকে গত মে মাসে আটক করে রুশ সেনারা। তারা খারকিভের কুপিয়ান্সক থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ১২০ কিলোমিটার দূরের আরেকটি স্থানে হেঁটে রওনা দিয়েছিলেন।

কিন্তু রুশ সেনাদের বসানো প্রথম চেকপোস্টেই তাদের আটক করা হয়। এরপর চোখ ও হাত বেঁধে রাশিয়ার সীমান্তের ভোবচানস্কের একটি ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর মাধ্যমে তাদের চার মাসের দুঃস্বপ্নের এক যাত্রা শুরু হয়। তাদের আটকে রেখে জোর করে কাজ করানো হতো এবং নির্যাতন চালানো হতো।

এই সাতজনের মধ্যে ছয়জন ছিলেন পুরুষ। বাকি একজন নারী। ছয়জন পুরুষকে এক রুমে। আর নারীকে আলাদা রুমে রাখা হতো।

ম্যারি এডিট উথাজকুমার নামে ওই নারী বলেন, তারা আমাদের একটি রুমে আটকায়। যখন আমরা গোসলে যেতাম তখন তারা আমাদের পেটাত। আমাদের একে-অপরের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হতো না। আমরা তিনমাস আটকে ছিলাম।

ওই সাতজন শ্রীলংকানদের মধ্যে আরেকজন জানান, তাদের কোনো কারণ ছাড়া পেটানো হতো। রুশ সেনারা মদ পান করে তাদের ওপর নির্যাতন করত।

দিলকুশান রবার্টক্লাইভ নামে একজন বলেছেন, আমরা ক্ষুদ্ধ ও হতাশ ছিলাম। শুধুমাত্র প্রার্থনা আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছিল।

৩৫ বছর বয়সী থিনেশ গোগেনথিরান নামে একজন বলেছেন, আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় একাধিকবার তারা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। তাদের একজন আমার পেটে ঘুসি মেরেছিল। এতে দুইদিন আমার পেটে ব্যাথা ছিল। সে এরপর আমার কাছে টাকা চেয়েছিল।

এদিকে ইউক্রেনের সেনারা যখন খারকিভে ঢোকা শুরু করছিল তখন নিজেদেরে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান এ সাত শ্রীলংকান। এরপর তারা সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় ইউক্রেনের পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।

বর্তমানে তারা একটি রিহ্যাবিলেশন কেন্দ্রে আছেন।

সূত্র: বিবিসি