বাংলাদেশকে বিনামূল্যে ট্রানজিট দিতে চায় ভারত। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব করা হয়েছে বলে দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার দুই দেশের সরকার প্রধান পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার যৌথ বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই বিবৃতিতে এসব তথ্য জানা যায়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে বুধবার যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে দুই দেশ। এতে মোট ৩৩টি অনুচ্ছেদে দুই দেশের সরকার প্রধানের বৈঠকের সারমর্ম তুলে ধরা হয়েছে।
যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, ভারত এ ট্রানজিট বিনামূল্যে বাংলাদেশকে দিতে চায়। যাতে বাংলাদেশ তার রপ্তানি পণ্য তৃতীয় দেশে পাঠাতে পারে। এ জন্য সুনির্দিষ্ট স্থল সীমান্ত বন্দর, বিমানবন্দর এবং সমুদ্র বন্দর বেধে দেওয়া হবে। এ সময়ে ভারত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য ভারতের বন্দর ব্যবহারের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এছাড়া ভুটান ও নেপালে ভারতের ওপর দিয়ে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশকে বিনামূল্যে ট্রানজিট দিচ্ছে ভারত।
বৈঠকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রুট ব্যবহার করে বাংলাদেশ পক্ষ ভুটানের সঙ্গে রেল সংযোগের জন্য অনুরোধ করেছে। এ অনুরোধ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে বিবেচনায় নিতে রাজি হয়েছে ভারত। আর সীমান্ত রেল সংযোগ কার্যকর করতে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ক্রসিংয়ের ভারতের রেল চলাচলের জন্য বাংলাদেশকে বন্দর বাধা দূর করতে অনুরোধ করেছে ভারত।
চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর চুক্তির আওতায় বন্দর ব্যবহার করে পরীক্ষামূলক পণ্যের চালান যাওয়া নিয়ে দুই নেতা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। উপকূলীয় জাহাজ চলাচল চুক্তির আওতায় তৃতীয় দেশের পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্র বাড়াতে ভারতের পক্ষ থেকে আবারও বৈঠকে অনুরোধ জানানো হয়। সেই সঙ্গে দুই দেশের সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দ্রুত কাজ করতে দুই পক্ষই একমত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ নদীপথ ব্যবহার করে ট্রানজিট চুক্তি পিআইডব্লিউটিটি’র আওতায় রুট ৫ ও ৬ এবং ৯ ও ১০ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তের বিষয়ে একমত হয়েছে দুই পক্ষ। ফেনী নদীর ওপর মৈত্রি সেতু দিয়ে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস সুবিধা চালু করার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে অনুরোধ করা হয়।
এছাড়া বিবিআইএন মটরযান চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে বৈঠকে দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় ও উপাঞ্চলিক সংযোগ চালু করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। এ জন্য মহাসড়ক তৈরিসহ এ সংক্রান্ত প্রকল্পগুলো নিতে বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে ভারত। একইভাবে ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড তৃপক্ষীয় মহাসড়কে অংশীদার হতে ভারতকে আবারও অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।