চট্টগ্রাম থেকে সুজা তালুকদার

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক কিছু্ই সম্ভব। যেমনটা হয়েছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে। এক সময়ের ছাত্র শিবিরের ক্যাডার এখন ছাত্র লীগের ও আ.লীগের নেতা বনে গেছেন। ছাত্র লীগ আর আ.লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে সব অপকর্মই করে চলেছেন এই তথাকথিত ছাত্র লীগ নেতা নামধারী ছাত্র শিবিরের ক্যাডার মোহাম্মদ হাসান। তিনি এখন চট্টগ্রামের মাটিতে আওয়ামী লীগের পোষাকে ডিজিটাল সন্ত্রাসী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বলে চট্টগ্রাম সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি চট্টগ্রামের রাউজান থানার অধীনে তোতা গাজী বাড়ীর স্থানীয় বাসিন্দা। সন্ত্রাাসী লাইনে আসার পর স্থায়ী ঠিকানা ছেড়ে চলে যান চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবের পেছনে আম্বিয়া সেরিন ভবনের নিচ তলায়। যা তিনি জবর-দখল করে রেখেছেন কোন বৈধ দলিল ছাড়াই। এ ঠিকানাও বদলে ফেলেছেন, ৩৯৭ জলিলগঞ্জ পাথরঘাটা, চট্টগ্রাম সদর-৪০০০ এর ঠিকানা ব্যবহার করছেন। এক সময় বেবি টেক্সির পেশায় থাকা এই ছাত্র শিবির ক্যাডার  জামাত শিবিরের ক্যাডার তছলিম  উদ্দিন মন্টুর সহযোগি ছিলেন।

তার নামে অভিযোগের শেষ নেই।  লিখিত ভাবে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে সন্ত্রাসী লাইনে পা রাখে। তথিত আছে বর্তমানে তিনি ওয়ালথার পিপিকে অত্যাধুনিক ব্র্যান্ডের অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ান। তার বিরুদ্ধে একাধিক বার জাতীয় দৈনিক সহ চট্টগ্রামের স্থানী মিডিয়াতে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। ২৪ জানুয়ারী ২০২১ দৈনিক আমাদের সময়ে ছাপা হয় ‘শিবির ক্যাডার এখন আ.লীগের নিয়ন্ত্রক’, ২৫ জানুয়ারী ২০২১ সালে বাংলাবাজারে ছাপা হয় ‘চট্টগ্রামের শিবিরের সন্ত্রাসী হাসান এখন আওয়ামী লীগ পরিচয়ে’, ১২ই ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে  দৈনিক আজাদী পত্রিকায় ছাপায় ‘অস্ত্র সহ মন্টু আটক হাসান, দুই সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার’, ২১ আগষ্ট ২০২২ সালে দৈনিক পূর্বকোণে ছাপা হয় ‘মুহুরী হত্যা মামলার প্রধান আসামী মন্টুর দেহরক্ষী হাসান গ্রেপ্তার’। এতো কিছুর পরও এই ছাত্র শিবির ক্যাডার আ.লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ২০২২ সালেও বেশ ভালই আছেন। চলছে তার সকল অপকর্ম আর সন্ত্রাসী কার্যক্রম।

এই তো কয়েক দিন আগে এই হাসানের নামে আবারো মামলা রুজু হয়েছে। একাধিক পত্রিকা আর অনলাইনে সংবাদও প্রচার হয়েছে। কিন্তু তাতে হাসানের সামান্যতম সমস্যা হয়নি। চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর উপর হামলা ও হুমকির অভিযোগে মামলা হয়েছে সন্ত্রাসী হাসানের বিরুদ্ধে। ৩১ আগষ্ট বুধবার ব্যবসায়ী হাজি মোঃ আলম ববি বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত মামলা দায়ী করেন।

মামলা সূত্র জানা যায়-মেসার্স মাওয়া এন্টারপ্রাইজ ও এ প্রতিষ্ঠানের প্রোপ্রাইর হাজী মোঃ আলম ববিকে হত্যার হুমকির প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে দায়ের করা সি আর মামলা নং ২৮৫/২০২২ (বোয়ালখালী থানা) সূত্রে জানা যায়-চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন জামাল খান ওয়ার্ডের চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পিছনে আম্বিয়া সেরিন ভবনের সামশুল আলমের পুত্র মোহাম্মদ হাসান সাথে হাজী মোঃ আলম ববি’র সাথে বিবাদীর ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকায় গত ২৬ জুন ২০২২ইং, হাসানের ছোট ভাই কামাল উদ্দিন সহ বাদীর নিকট ২০ লক্ষ টাকা হাওলাত চান। বাদী প্রথমে দিতে না চাইলেও বিবাদের ভাই বিপদে পড়েছে উল্লেখ করে কাকুতি মিনতি করিলে বাদী দয়াপরবশ হইয়া বাদীর প্রতিষ্ঠিত দাতব্য প্রতিষ্ঠানের খবচের জন্য নেওয়া টাকা হইতে বিবাদীকে নগদ ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করেন।

বিবাদী নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্যাডে উক্ত টাকা গ্রহন পূর্বক ১ মাসের মধ্যে উক্ত টাকা ফেরত প্রদানের অঙ্গীকার করেন। যদিও এখন হাসান টাকা দেবার বদলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।বাদী পবিত্র হজ্ব পালনে গমন করায় বিবাদীর সাথে যোগাযোগ করিতে পারেন নাই। পবিত্র হজ্ব পালন করে দেশে আসলে বাদী বিবাদীর নিকট টাকার ফেরত চান, বিবাদী আজ কাল দিব বলিয়া সময়ক্ষেপন করিতে থাকেন। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট ২০২২ইং বাদী বিবাদীর হাওলাত টাকা ফেরত প্রদানের জন্য বলিলে বিবাদী উল্টো বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন, টাকা প্রদান করিতে অস্বীকার করেন। বাদী বিবাদীকে এরকম করার জিজ্ঞাসা করিলে বিবাদী বাদীকে দেখে নেওয়া হুমকি প্রদানসহ বাদীর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ও প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণের উপর হামলা করার হুমকি প্রদান করেন।

মামলার বিষয় বাদীর এডভোকেট মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিজ্ঞ আদালত মামলা গ্রহন করে পিআইবি কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া জন্য আদেশ দেন। বিবাদী মোঃ হাসানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক বার্তাকে বলেন, ‘এসব মিথ্যা অভিযোগ, আমি তার কাছে থেকে কোন টাকা নেই নাই। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে অনেক প্রচার চালাচ্ছে। এতে কোন লাভ হবে না। আমি ওদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করব।’