জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে এসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আসুন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন। দেখবেন কার কতো ভোট আছে, কে কত জনপ্রিয়- পরিষ্কার হয়ে যাবে।’

বুধবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটা প্রশ্নেরও জবাব দিতে পারেননি মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়াউর রহমান কেন বঙ্গবন্ধু হত্যকারীদের রক্ষা করতে সংসদে আইন পাশ করলেন? এই প্রশ্ন করলেই আপনি এড়িয়ে যান। জবাব পাই না। এবার দেখলাম ১৫ তারিখে খালেদা জিয়ার জন্মদিন আরেকটু আড়াল করে ১৬ আগস্ট দোয়া মাহফিল হলো। তার জন্য দোয়া মাহফিল করেন আপত্তি নেই, কিন্তু ভুয়া জন্মদিনের উপলক্ষ্যে দোয়া মাহফিল এখানে গোটা জাতির আপত্তি আছে।

একজন মানুষের কয়টা জন্মদিন থাকে- সেই প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সর্বশেষ করোনা টেস্ট কিছুদিন আগে ৬ নম্বর জন্মদিন হলো। ৬টা জন্মদিবস। একটা মানুষের এত জন্মদিবস কীভাবে থাকে ফখরুল সাহেব, সত্যের মুখোমুখি হতে কেন ভয় পান? আপনার কাছে জানতে চেয়েছিলাম- চট্টগ্রামের লাশ ঢাকায় আসল। সেই লাশ চন্দ্রিমা উদ্যানে জানাজা শেষে সমাধি হলো। এই সময়টার জিয়াউর রহমানের একটা ছবি দেখাতে পারবেন? তিনি ওই কফিনে আছেন এর প্রমাণ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হলেন। তার লাশেরও কোনো খবর ছিল না। ইসলামাবাদের ফয়সাল মসজিদের সামনে অনেক সাংবাদিক মন্তব্য করেছিলেন এই কফিনে জিয়াউল হক নেই। ওখানে জিয়াউল হক নেই। এখানে জিয়াউর রহমান নেই। এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।

এ সময় মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কার বিচার করবেন? আপনাদের অনেকের বিচার বাকি রয়েছে। আদালত শুধু প্রচলিত আদালত নয়, ইতিহাসের আদালত, জনতার আদালতও আছে, নিয়তির আদালতও আছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একুশ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করেছেন। কত নারীর সম্ভ্রম নষ্ট করেছেন। ভুলে গেছেন আহসানউল্লাহ মাস্টার, মঞ্জুরুল ইমাম, শাহ এসএম কিবরিয়া; এভাবে কতজন, যশোরের সাংবাদিক শামসুর রহমান, খুলনার মানিক লাল, বালু ভাই, কত হত্যাকাণ্ড এই বাংলায় সংগঠিত করেছেন। এগুলোর বিচার হবে না? এগুলো কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়?

তিনি বলেন, নিজের দলের জামালউদ্দিনকে চট্টগ্রামে অপহরণ করে তাকে হত্যা করা হলো। পরে জানা গেল জামাল উদ্দিনকে হত্যা করেছে বিএনপি। সেই গুমের খবর কি ফখরুল সাহেব জানতেন না? লালবাগে আমাদের মাহফুজ বাবুকে ধরে নিয়ে গুম করেছেন আজ পর্যন্ত কেউ জানে না, তার পরিবার জানে না। এর জবাব দেবেন কি ফখরুল সাহেব?

ওবায়দুল কাদের বলেন, সত্যি যারা গুম হয়েছে; প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ- এমন কোনো ঘটনা থাকলে প্রয়োজনে তদন্ত করে বের করা হবে। এখানে আমাদের কোনো ভয় নেই। সত্য সত্যই। নিজের দলের লোকদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে শেখ হাসিনা এযাবত কখনো কুন্ঠিত হননি। দলের লোক অন্যায় করে বিনা শাস্তিতে পার হওয়ার উপায় নেই।

এ সময় মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ভয়কে যারা জয় করতে জানে না তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। এরা কাপুরুষ। কাজেই ভয়কে জয় করতে শিখুন। ১৩ বছর ধরে চিৎকার করছেন জনগণ সাড়া দেয়নি।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তেলের দাম কমিয়ে দেন। পৃথিবীতে তেলের দাম কমিয়ে দেওয়ার কোনো নজির নেই। সেটাও আপনারা কটূক্তি করেছেন। ধন্যবাদ না জানিয়ে কটূক্তি করছেন। এটা হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো অবস্থাতেই মাথা গরম করা যাবে না। আমরা কাউকে আক্রমণ করব না। আক্রমণ হলে পালটা আক্রমণ হবে।

কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।