রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলা ইতিহাস বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রোববার সকাল ৯টায় ফলাফল পূনর্মূল্যায়নের দাবিতে একাডেমিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিভাগের শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর অভিযোগ করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যে পাঁচজন শিক্ষার্থীদেরকে ফেল করানো হয়েছে তারা সবাই বিভাগের নিয়মিত শিক্ষার্থী। তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়েছেন পরিক্ষা কমিটির সদস্যরা। এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষক ও বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার বলার পরেও বিষয়টা সমাধান করেন নি। গত ৪ আগস্ট থেকে আজ ২৪ দিন হয়ে গেলেও এ সমস্যার কোনো সমাধানই করেনি বিভাগ কর্তৃপক্ষ ও বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। যার ফলে বাধ্য হয়েই তাদেরকে আন্দোলনের পথ বেছে নিতে হয়েছে। পরীক্ষায় ফেল আসা শিক্ষার্থীরা হলেন, আব্রাহাম হাজদা খোকন, তাসনিয়া রহমান রিন্থি, মেহেদী হাসান পুলক, উইলিয়াম ও শাফিন।
তানজীম রহমান নীরব নামের বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বিভাগের আটটি বিষয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছি আমরা। এটা যেহেতু বিভাগের ব্যাপার তাই আমরা কাউকে কিছুই বলিনি। আসলে শিক্ষকরা আমাদেরকে মানুষই মনে করে না। পাঁচজন শিক্ষার্থী যাদের ফেল এসেছে তারা সবাই নিয়মিত ক্লাস করে। তাদের ফেল করার কারণ নেই। তাদের সাথে অন্যায় হয়েছে বলে আমরা মনে করি। গত ৪ আগষ্ট থেকে সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি কিন্তু ২৪ দিন ধরে ঘুরাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।

পরীক্ষায় ফেল আসা শিক্ষার্থী শাফিন জানান, আমাদের তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় শিক্ষকরা নিজেদের মত করে ফলাফল প্রকাশ করেছেন। আমরা শিক্ষকদের কাছে বারবার ফলাফল পূনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছি কিন্তু তারা কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। বরং তারা বলেছে যেটা ফলাফল আসছে সেটাই মেনে নিতে। এখন আমরা যেহেতু আন্দোলনে মানতে বাধ্য হয়েছি যতক্ষণ না বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্যের কাছ থেকে সমাধানের আশ্বাস পাচ্ছি ততক্ষণ আন্দোলন চালিয়ে যাবো বলে জানান এই শিক্ষার্থী’

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর আসাবুল হক। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যেহেতু একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। এটা সমাধান করতে কয়েকটি ধাপ রয়েছে। হুট করেই এর সমাধান করা যাবেনা। আমি দুজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে উপাচার্যে কাছে যাচ্ছি তারা তাদের সমস্যা কথা বলবেন। তারপর কিভাবে সমস্যাটা সমাধান করা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে আশ^স্ত করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের সভাপতি প্রফেসর টিএম এম নূরল মোদ্দাসের চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রসঙ্গ নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে জরুরী মিটিংয়ে বসেছি। আশা করছি সমাধান হবে’।

এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই সমস্যার ব্যাপারটি নিয়ে আমি উপাচার্যের সাথে বলেছি। আমরা এই বিষয় নিয়ে জরুরি আলোচনায় বসেছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়টি সমাধান হবে’।