শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, পড়াশোনা বিষয়টি এখনও জোর জবরদস্তিমূলক হয়ে আছে। পরীক্ষা ভীতি, অতিরিক্ত বইয়ের বোঝায় জর্জরিত আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা। আমরা এ অবস্থার পরির্বতন চাই। সেজন্য নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

রোববার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি কর্তৃক ‘শিক্ষাব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে বর্তমান শিক্ষা-ব্যবস্থাকে আনন্দময় করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সঞ্চালনায় ওয়েবমিনারে আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ডাকসুর সাবেক ভিপি অধ্যাপক মাহফুজা খানম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুজিত সরকার।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, এ কথা সত্য যে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। কওমি মাদ্রাসা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এখানে বড় সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। আমরা এ থেকে উত্তরণে কাজ করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, গবেষণায় দেখেছি ১৯৪৮ সাল থেকে যে সরকার এসেছে তারা প্রত্যেকেই পাঠ্যসূচি পরিবর্তন করেছে। এর মধ্য দিয়ে অনেক সরকারই পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি করছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের বের হতে হবে।

নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি দরকার নৈতিক শিক্ষা। তাই পাঠ্যসূচিতে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই।

অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পড়ালেখা শেষ করতে পারে না। এখানে বেশিরভাগই গরিবদের ছেলেমেয়েরা পড়ে। তাই আমাদের এ দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। একই সঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যেন প্রযুক্তিবান্ধব হিসেবে বেড়ে ওঠে সে জন্যও পদক্ষেপ দিতে হবে। তাদেরকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি বন্ধে সরকারের জোরালো পদক্ষেপ চান শিক্ষাবিদরা। একই সঙ্গে পাঠ্যপুস্তকে অসাম্প্রদায়িকতা, মানবিকতা ও নৈতিক শিক্ষার যুক্ত করার দাবি করেন।