খুলনার কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামের একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যার মামলাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। হত্যাকাণ্ডের পরপরই মূল ঘটনা পাশ কাটিয়ে নিরীহ ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছিল নিহতদের পরিবার। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে কোনো তদন্ত হয়নি। ৬ মাস ধরে মামলাটির দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
অবস্থায় রোববার খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি এবং অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। এছাড়া মামলার তদন্তভার সিআইডি অথবা পিবিআইতে হস্তান্তর, তদন্তের নামে গ্রামের নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানি বন্ধ, হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে আলোচিত সীমানা পিলার ও তক্ষক সাপের বিষয়টি অধিকতর তদন্ত এবং গত ২৭ জুলাই পাইকগাছায় সীমানা পিলারসহ আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানানো হয়।
গত বছর ২৫ অক্টোবর সকালে কয়রার বামিয়া গ্রামে পুকুর থেকে হাবিবুল্লাহ, তার স্ত্রী বিউটি বেগম ও ১২ বছরের মেয়ে হাবিবা সুলতানা টুনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন হাবিবুল্লাহর মা কোহিনুর খানম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি খুলনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে।
গত ১০ জানুয়ারি খুলনার পুলিশ সুপার মাহবুব হাসান প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, বিউটি বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশি সাইফুর রহমানের অনৈতিক সম্পর্কে বাধা ও প্রতারণামূলক আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
তবে শুরু থেকেই মামলার বাদি কোহিনুর খানম অভিযোগ করেন, মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তার দাবি, সীমানা পিলার বিক্রির জেরেই তার ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতীকে হত্যা করা হয়েছে। মূল আসামিদের বাদ দিয়ে গ্রামের নিরীহ মানুষদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে কোহিনুর বেগম উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে তার ছেলে মফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা বারবার দাবি করছি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সীমানা পিলার ও তক্ষক সাপের ব্যবসা রয়েছে। কিন্তু পুলিশ তদন্তে এ বিষয়টি সামনে আনছে না।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই সৌরভ কুমার দাসব লেন, গ্রেপ্তার দুই জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তাদের এবং নিহত ব্যক্তিদের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আমরা রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। এছাড়া পাইকগাছায় আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।