ঢাকা ওয়াসার বহুল আলোচিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান গত ১৩ বছরে বেতন-ভাতাসহ কী কী সুবিধা পেয়েছেন- তার হিসাব চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ বিষয়ে একটি রুল জারি করেন।

সেবাদানে ব্যর্থতার পরেও ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানকে অপসারণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) আহ্বায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ রুল জারি করেন।

রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

২০০৯ সাল থেকে ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে আছেন তাকসিম এ খান। এর মধ্যে কেটে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়। নিয়োগের পর থেকে বিভিন্ন সময় আলোচিত সমালোচিত তিনি।প্রথম নিয়োগের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৬ বার তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি।

ঢাকায় অনেক এলাকায় ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পানের অনুপযুক্ত হলেও তাকসিম এ খানের দাবি, ওয়াসার সরবরাহ করা পানি সুপেয়। তিনি নিজে সেটি না ফুটিয়েই পান করেন। তার এই বক্তব্যে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এরপর এক সমাজকর্মী তাকে জুরাইন এলাকায় সরবরাহ করা ওয়াসার পানির শরবত খাওয়াতে আসেন ওয়াসা ভবনে। কিন্তু সেদিন দেখা দেননি তাকসিম এ খান।

এরপর সরকারের কাছে পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন ওয়াসার এমডি। সরকারকে তিনি জানান, ওয়াসা এখনো ভিক্ষা করে বা সরকারের ভর্তুকিতে চলে। তাই পানির দাম বাড়িয়ে সেই ভর্তুকি কমাতে চান তিনি।এরমধ্যেই আবার নিজের বেতন বাড়ানোর কথা বলেন বোর্ডকে। ওয়াসার কোনো আয় না থাকলেও নিজের এবং কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবেও সমালোচিত হন তিনি।

এ ছাড়া বিদেশে বসে অফিস করা নিয়েও সমালোচিত তাকসিম এ খান। সম্প্রতি ফের অফিস করতে দুই মাসের ‘ভার্চুয়াল অফিসের’ অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি। তবে তা বোর্ড নাকচ করে দেয়। এর আগে ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই দুই মাস ভার্চুয়াল অফিসের অনুমতি নিয়ে আমেরিকা যান ঢাকা ওয়াসা এমডি। দুই মাসের অনুমতি থাকলেও সেখানে থেকে তিন মাস ভার্চুয়াল অফিস করেন। শুরু থেকে তিনি বছরের একটি লম্বা সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাটান।