যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ব্যবস্থাপনায় শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার-২০২২ এর জন্য ৭টি ক্যাটাগরিতে মোট ৯জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও ২টি প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক শহিদ শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন  ও শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামীকাল ৫ আগস্ট শুক্রবার সকাল ৯টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করবেন।
তিনি বলেন, পুরস্কার হিসেবে প্রত্যককে একলাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হবে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে ‘শহিদ শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ২০২২’ এর জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন।
এবারের পুরস্কারের বিজয়ীরা হলেন-
উদীয়মান ক্রীড়াবিদ: ক্রিকেটার শরিফুল ইসলাম ও আরচ্যার দিয়া সিদ্দিকী।
ক্রীড়াবিদ: ক্রিকেটার লিটন দাস, শ্যুটার আবদুল্লাহ হেল বাকী ও ভরোত্তোলক সাবেরা সুলতানা।
সংগঠক: স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সাইদুর রহমান প্যাটেল ও জাতীয় মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমা শামীম।
আজীবন সম্মাননা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও দেশের বর্ষীয়ান ক্রীড়া সংগঠক হারুনুর রশীদ।
সংগঠন: বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)।
পৃষ্ঠপোষক: গ্রীণ ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড।
ক্রীড়া সাংবাদিক: কাশিনাথ বশাক
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন একজন স্বাপ্নিক তরুণ। বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার অবদান অনস্বীকার্য। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে প্রচলিত সনাতনী ক্রীড়া-উন্নয়ন ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানের ক্রীড়া প্রবর্তনে প্রয়াসী হয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতায় আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ কামাল। ব্যক্তিগত প্রজ্ঞা ও নিজস্ব ক্রীড়া ভাবনায় এদেশে আধুনিক ফুটবলের পথিকৃৎ তিনি। ক্রীড়ানুরাগী, সংস্কৃতিমনা, তারুণ্যদীপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেছেন। জাতির এ কীর্তিমান তরুণ শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের অবদানকে স্বরণীয় এবং তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরুপ ক্রীড়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার’ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
পুরস্কার প্রদানের ৭টি ক্ষেত্র হচ্ছে ক) আজীবন সম্মাননা খ) খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ গ) ক্রীড়া সংগঠক ঘ) উদীয়মান খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ ঙ) ক্রীড়া সাংবাদিক চ) ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশন/ফেডারেশন/ক্রীড়া সংস্থা ছ) ক্রীড়া পৃষ্ঠাপোষক/স্পন্সর।
তিনি আরো বলেন, ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন শাখায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ নীতিমালার আলোকে সংশ্লিষ্ট কমিটি কর্তৃক পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে যাচাইবাছাই পূর্বক আমরা উপরোল্লখিত ৭ টি ক্যাটাগরিতে মোট ৯ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও ২ টি প্রতিষ্ঠানকে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার’ ২০২২ প্রদান করছি।
প্রতিমন্ত্রী বিজয়ীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমি সম্মানজনক এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত সকলকে অগ্রীম শুভেচছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি এ পুরস্কার ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট সকলকে ভবিষ্যতে ক্রীড়াক্ষেত্রে আরো ভালো কাজ করতে উৎসাহ যোগাবে।
সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগামীকাল ধানমন্ডিসহ আবাহনী মাঠে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে এবং বনানীস্থ শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।
তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক শহিদ শেখ কামালকে নিয়ে প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হবে। জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলাতে একযোগে নানা কর্মসূচি আয়োজিত হবে।
২০২০ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ শেখ কামালের ৭১ তম জন্মবার্ষিকী  উদযাপন করে এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ শেখ কামালের জন্মদিন ৫ আগস্টকে ‘ক’ শ্রেনীভুক্ত দিবস হিসেবে জাতীয়ভাবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এ সময়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ক্রীড়া) মো: নজরুল ইসলাম, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহসহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন