ভঙ্গুর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাদের মাাটিতে প্রথম টি-২০ ম্যাচে হেরে বসে বাংলাদেশ। শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতে টাইগাররা সিরিজে ১-১ সমতা আনে। এবার মিশন সিরিজ পকেটে জমা করা। কিন্তু অধিনায়ক সোহান দ্বিতীয় ম্যাচে আঙ্গুলে আঘাত পেয়ে দেশে ফিরছেন। সোহানের পরিবর্তে মোসাদ্দেক হোসেনের নেতৃত্বে সিরিজ জয়ের মিশন আজ টাইগারদের।
আজ মঙ্গলবার সিরিজ নির্ধারণী শেষ ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় হারারে স্পোর্টস ক্লাবে শুরু হবে। টি স্পোর্টস চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে ম্যাচটি। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৭ রানে হারে বাংলাদেশ। তবে পরের ম্যাচেই ঘুড়ে দাঁড়ায় টাইগাররা। ৭ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা আনে তারা। সিনিয়রদের ছাড়া প্রথম ম্যাচ হারের পর দল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিলো। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় প্রমান করে যেকোন অবস্থায় জিম্বাবুয়েকে হারাতে সক্ষম নতুন চেহারার এই দল।
প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটার ওয়েসলি মাধভেরে ও সিকান্দার রাজার কাছে হার মানে বাংলাদেশ। দুই ব্যাটারের দৃঢ়তায় ৩ উইকেটে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বোলিং লাইন-আপের সেরা বোলার মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদকে পাত্তাই দেননি মাধভেরে ও রাজা।
সিরিজে ঘুড়ে দাঁড়াতে সময় নেয়নি বাংলাদেশ। অফ-স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেনের ঘুর্ণিতে দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে কুপোকাত করে টাইগাররা। বাংলাদেশের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মোসাদ্দেক। টি-২০তে বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন মোসাদ্দেক। তার বোলিং নৈপুন্যে ৮ উইকেটে ১৩৫ রানের বেশি করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।
এর ফলে ১৩৬ রানের টার্গেট স্পর্শ করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে। লিটন দাসের হাফ সেঞ্চুরিতে ১৫ বল বাকি রেখেই জয়ের স্বাদ পায় টাইগাররা। ৩৩ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন লিটন।
তৃতীয় ও শেষ টি-২০তে আবারও স্পিন দিয়ে জিম্বাবুয়েকে ঘায়েলের পরিকল্পনা বাংলাদেশের। তবে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের আগে বড় ধাক্কা বাংলাদেশ শিবিরে। আঙুলের ইনজুরির কারণে চলমান সিরিজ থেকেই ছিটকে গেছেন টি-২০ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।
সোহানের অনুপস্থিতিতে শেষ টি-২০তে দলের নেতৃত্ব ভার মোসাদ্দেক হোসেনকে দেয়া হয়। তবে সোহানকে ছাড়াই সিরিজ জিততে যথেষ্ট সক্ষম বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-২০তে ২০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন মোসাদ্দেক। তিনি বলেন, সিরিজ জয়ের জন্য তৃতীয় ম্যাচ জিততে আমরা আশাবাদী।
মোসাদ্দেক আরো বলেন, এটি আসলে টি-২০ ক্রিকেটে আমার দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট। কিন্তু আমি কবে প্রথম পাঁচটি পেয়েছি তা মনে করতে পারছি না। তবে দ্বিতীয়টি ম্লান হয়নি। আমি যখন বোলিং করি তখন ভাবি না আমি একজন অকেশনাল বোলার। আমি নিজেকে নিয়মিত বোলার হিসেবে ভাবতে ভালোবাসি। দ্বিতীয় খেলায় যখন অধিনায়ক আমাকে বল দিয়েছিলেন তখন আমি শুধু প্রতিপক্ষের রান আটকানোর চেষ্টা করি। তারা আমার উপর চড়াও হতে গিয়ে উইকেট দিয়েছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৮ ম্যাচ খেলে ১২টিতে জয় ও ৬টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে বাধ্য হয়েই একাদশে পরিবর্তন আনতে হবে টাইগারদের। কারন ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন সোহান। সোহানের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পেলেন বিশ্রামে থাকা রিয়াদ। আর উইকেটের পেছনে দায়িত্ব সামলাবেন লিটন দাস।
বাংলাদেশ স্কোয়াড :
মুনিম শাহরিয়ার, এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শেখ মাহেদি, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদি হাসান মিরাজ ও পারভেজ হোসেন ইমন।
জিম্বাবুয়ে স্কোয়াড :
ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), রায়ান বার্ল, রেগিস চাকাভা (উইকেটরক্ষক), তানাকা চিভাঙ্গা, লুক জঙ্গি, ইনোসেন্ট কাইয়া, ওয়েসলে মাধভের, তাদিওয়ানশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টনি মুনিয়োঙ্গা, রিচার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নিয়ুচি, সিকান্দার রাজা, মিল্টন শুম্বা ও সিন উইলিয়ামস।