জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকারা আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে দেরিতে আসবে এটা নতুন ঘটনা নয়। এটাই তো স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। ক্রিকেটের দিন যতো সোনালী আলোতে রঙ্গিন হয়েছে ক্রিকেটারদের মধ্যে ‘ভাব-টা; দিন দিন বেড়েই চলেছে।

মিডিয়াকে বসিয়ে রাখাটা যেন আজ নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে বাংলাদেশের যেকোন অনুষ্ঠানে। আর সেটা যদি হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে, তাহলে তো কথাই নেই। হাবিবুল বাশার, খালেদ মাসুদ পাইলট, খালেদ মাহমুদ সুজন, মাশরাফি, আশরাফুল, মুশফিক, তামিম বা রিয়াদ সবাই অধিনায়ক হবার পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বসিয়ে রেখেছেন দীর্ঘ সময়। এরই ধারা বজায় রাখলেন টি-২০ দলের নতুন অধিনায়ক সোহান। টানা আধ ঘন্টা বসিয়ে রেখে তবেই সোহান মিডিয়ার সামনে উপস্থিত হলেন। নিয়ম মেনেই সিনিয়ররা লেট করে হাজির হন, এটাই স্বাভাবিকভাবে, নতুন উত্তরসূরী সোহান তা রক্ষা করলেন বটে।

সোহান স্টেডিয়ামে ছিলেন না তা নয়। মাঠে এসেই একাডেমি মাঠে ব্যাট হাতে ঝালিয়ে নেন নিজেকে। এরপর আসে বৃষ্টি। রোববার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনের নির্ধারিত সূচি ছিল। সেটি শুরু হয় ৪০ মিনিট দেরিতে ১২টা ১০ মিনিটে। তিন ম্যাচের জন্য দায়িত্ব পাওয়া এই তরুণ ক্রিকেটার সব মিলিয়ে প্রায় ২০ মিনিট ধরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

বিসিবি আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে টি-টোয়েন্টিতে সোহানের কাঁধে নেতৃত্বের ভার তুলে দিয়েছে সিনিয়রদের বাদ রেখে। মাশরাফিকে বাদ দিলে ৪ তারকার (পান্ডব) সীমানা থেকে বেরোনো যেমন কঠিন ছিল, তেমন আলোচিতও ছিল। সে কারণেই যতো আলোচনা-সমালোচনা।  কেমন হবে সোহানের ভাবনা, কেমন হবে গেম প্ল্যান? এসব জানার জন্য ক্রীড়া সাংবাদিকদের আগ্রহ থাকাটই স্বাভাবিক। সে কারণেই আজ নির্ধারিত সময়ের আগেই সংবাদ সম্মেলন কক্ষে তিল ধারণের ঠাই ছিল না।

দুই দিন আগেই শুক্রবার বিকেলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে বৈঠকের পর সোহানের নাম ঘোষণা করেন বিসিবি ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। সোহানকে নেতৃত্ব দেওয়ার পক্ষে সাবেক ক্রিকেটারের জালালের যুক্তির সারমর্ম হলো, ‘সে পারফেক্ট।’

জালাল ইউনুস বলেছিলেন, ‘সোহান লোকাল টিমে নেতৃত্বে দিয়েছে। ওর মধ্যে লিডারশিপ কোয়ালিটি দেখেছি। নেতৃত্বে দেয়াটা কোন একজনের সিদ্ধান্ত না এটা বোর্ডের। আমরা সবাই অোলাপ আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সোহানকে নেতৃত্ব দিয়েছি। আমরা মনে করছি যে তার নেতৃত্বগুণ আছে, অ্যাগ্রেসিভ, মোটিভেট করতে পারে, স্পিরিটেড এ ব্যাপারে আমরা নির্বাচকরাসহ সবাই একমত হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তবে আজ রোববারের সংবাদ সম্মেলনে আবিষ্কার হয়েছে ভিন্নধর্মী সোহান। ২২ গজে উইকেটের পেছনে সোহান সবসময় থাকতেন উদ্দীপ্ত। শুধু তাই নয় সতীর্থদের বিভিন্নভাবে উজ্জীবিত রাখতে পারদর্শী। সবসময় দেখা যায় আগ্রাসীভাব। শ্রীলংকায় নিদাহাস ট্রফিতে সোহানের এখনো উজ্জ্বল সবার মনেই। সবকিছু বিবেচনা করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য তার হাতে নেতৃত্বের চাবি তুলে দেয় বিসিবি।

অধিনায়ক হয়েও অনেক কিছুই ছেড়ে দিয়েছেন টিম ম্যানেজম্যান্টের ওপর। অধিনায়ক হিসেবে যে আলাদা কোনো চাপ রাখতে চান।  সংবাদ সম্মেরনে সোহান মিডিয়াকে বলেন, ‘প্রক্রিয়ার ভেতরে থাকতে হবে। আমরা জিম্বাবুয়ে যাওয়ার পর হয়তো আলোচনা হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ফেরার পর তেমন আলোচনায় বসা হয়নি। টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লে’ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ওই জায়গায় উন্নতি করার চেষ্টা করছি। আশা করছি আমরা ভালো করতে পারবো।’