গাজীপুরে মুক্তিপণের দাবীতে এক নারী পোশাক কর্মীকে অপহরণের ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসির গণপিটুনিতে এক দুধর্ষ ডাকাত নিহত হয়েছে। গজারী বন ঘেরাও করে অপহৃতকে উদ্ধার ও ওই ডাকাত সদস্যকে আটক করা হয়। সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানাধীন হালডোবা রক্ষিতপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার জয়দেবপুর থানার ওসি মাহতাব উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

নিহতের নাম- রাকিব (২৭)। সে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন রুদ্রপুর এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে।

পুলিশ, ভিকটিম ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন বাংলাবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় এক পোশাক কারখানায় চাকুরি করেন হাসি আক্তার (১৯)। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সহকর্মী ইলিয়াসকে সঙ্গে নিয়ে তিনি অপর এক সহকর্মীর বাসায় বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথে তারা রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা-কাপাসিয়া সড়কের হালডোবা এলাকার ফারিয়া লারা হাসপাতালের কাছে পৌঁছলে ৭/৮জন সশস্ত্র ডাকাত তাদের পথরোধ করে। ডাকাতরা তাদের জিম্মি করে রক্ষিতপাড়া এলাকার (রতন মুন্সির বাড়ির পূর্ব পাশে) গজারী বনের ভিতর নিয়ে যায়। ডাকাতরা সেখানে মুখে রুমাল চেপে হাসিকে একটি গাছের সঙ্গে বাঁধে এবং ইলিয়াসকে মারধর করে। এসময় ডাকাতরা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে কৌশলে ইলিয়াস ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকজনকে জানায়। খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন চারপাশ থেকে বনের ওই এলাকা ঘেরাও করে তল্লাশি চালিয়ে মধ্যরাতে ডাকাত দলের সদস্য রাকিবকে আটক করে। এসময় অন্য ডাকাতরা পালিয়ে যায়। উত্তেজিত লোকজন আটক রাকিবকে গণপিটুনি দেয় এবং তার দু’চোখ উপড়ে ফেলে ও দু’পা ভেঙ্গে ফেলে।

জয়দেবপুর থানার ওসি মাহতাব উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মুক্তিপণের দাবীতে অপহৃত নারী পোশাক কর্মী এবং গণপিটুনিতে গুরুতর আহত ডাকাত রাকিবকে উদ্ধার করে। রাকিবকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি ধারালো দা’ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় ভিকটিম হাসি আক্তার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে আরো একটি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় ৩টি ও শ্রীপুর থানায় আরো একটিসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

ওসি মাহতাব ও এলাকাবাসি আরো জানান, রাকিব ও তার তিন ভাইয়ের নেতৃত্বে এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসি। সম্প্রতি নিহত রাকিবের বড়ভাই ডাকাত সদস্য ফরহাদকে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার করে জিএমপি’র সদর থানার পুলিশ।