টেষ্ট আর টি-২০ সিরিজে হারের ফলে সমালোচনায় তীরে আহত ছিল টাইগার বাহিনী। ওয়েষ্ট ইন্ডিজ সফরে টানা হারের বৃত্তে থাকা বাংলাদেশ ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজে নিজেদের জাত চিনিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকদের।
২৯.২ ওভার (১৭৬ বল) না খেলেই জয় তুলেছে বাংলাদেশ। ১০৯ রানের মিশনে তামিম ১০৮ দলীয় স্কোরে থাকা অবস্থায় ব্যক্তিগত ৪৬ রানে ছিলেন। জয় পেতে ১ রানের জন্য তামিম মারলেন চার, আর তাতে তামিমের নামের পাশে ৫৩তম ওডিআই ফিফটি লেখা হয়ে গেল। ৯ উইকেটের জয়ে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে। এবার মিশন ৩ ম্যাচে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে ২০০৯ সালের মতো হোয়াইটওয়াশ করা।
টানা হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে ওডিআই সিরিজের ১ম ম্যাচে ৬ উইকেটে জয়ের পর আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে টেষ্টে আর টি-২০ সিরিজে হারের জ্বালা মিটল। টেষ্টে যেভাবে বাংলাদেশকে লজ্জা দিয়েছে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ সেভাবে টি২০ সিরিজে পারেনি। কিন্তু দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে যেভাবে বাংলাদেশকে হারিয়েছে তাতে বাংলাদেশের বোলিং যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক।
ওয়েষ্ট ইন্ডিজের আঘাত ফিরিয়ে দিয়ে পাল্টা জবাবটা ভালই দিয়েছে তামিমের দল। দুই ওডিআই ম্যাচে বাংলাদেশের বোলিং তোপে দিশেহারা ছিল ওয়েষ্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। আসলে টেষ্ট আর টি-২০ সিরিজে জবে থাকা জ্বালার আগৃনে পুড়েছে স্বাগতিকরা।
তা না হলে ১ম ম্যাচে ৬ উইকেটে হারের পর আজ ৩৫ ওভারে ১০৮ রানে নিজ মাঠেই অলআউট হয় কি করে? টস জিতে তামিম ইকবাল বল হাতে তুলে নিয়ে এক বারের জন্যও স্বাগতিক ব্যাটারদের মাথা তুলতে দেননি। ১০৮ রানে অলআউট হবার পর টাইগারদের ক্যারিবিয়ান দ্বীপে তৃতীয় ওডিআই সিরিজ জেতা নিশ্চিত হয়ে যায়।
২০০৯ আর ২০১৮ সালের পর এটা তৃতীয় ওডিআই সিরিজে জেতা স্বাগতিকদের মাটিতে। ওয়েষ্ট ইন্ডিজের গড়া ১০৮ রানের জবাবে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে তামিমের সঙ্গে ক্রিজে নামে নাজমুল হাসান শান্ত। এই জুটি দলের রান ৪৮ পর্যন্ত টেনেন। এরপর শান্ত ২০ রান যোগ করে ক্যাচ দিলেন।
তবে এরপর আর পেছনে থাকায়নি বাংলাদেশের দ্বিতীয় জুটিতে ক্রিজে থাকা তামিম আর লিটন। তামিমের পাশে থাকা লিটন শেষ অবদি অপরাজিত রইলেন ২৭ বলে ৩২ রানে আর অধিনায়ক তামিম ইকবাল ম্যাচের শেষ করেই মাঠ ছাড়লেন। ১০৮ রানে থাকা অবস্থায়ও ভাবা যায়নি ৪৬ রানে থাকা তামিম ৫৩তম ফিফটির দেখা পাবেন। কিন্তু তামিম ২০.৪ ওভারে স্ট্রেইট ড্রাইভ খেললেন, তাতে বল সীমানার বাইরে। সিরিজ জয়ের ম্যাচে তামিমের নামের পাশে অপরাজিত ৬২ বলে ৭ চারে ৫০ রান।
এর আগে ৫০ ওভারের ম্যাচে৩৫ ওভারের বেশি টাইগার বোলিং তোপে টেকেনি স্বাগতিকরা। ৩৫ ওভারে অলআউট ১০৮ রানে! সিরিজ জেতার মিশনে টাইগারদের ১০৯ রান স্কোর বোর্ডে জমা করতে হবে।
মুলত স্বগতিক দলের টপ অর্ডারে ধ্বস নামিয়েছেন স্পিনার নাসুম আর মিরাজ। দুই স্পিনারই উইকেট শিকারের নেশায় মেতে ছিলেন। নাসুম ১০ ওভারে ৪ মেডেন দিয়ে ১৯ রানে ৩টি করে উইকেট পকেটে জমা করলে। আর মিরাজ তার চেয়েও এক ধাপ উপরে। ৮ ওভারে ১ মেডেন দিলেও ২৯ রানে নিলেন ৪ উইকেট। ওয়েষ্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশের বোলিং তোপে এতোটাই মাথা নিচু করে ব্যাট করতে বাধ্য হয় যে ১০ ওভারে স্কোর ছিল ২৬/১ আর ১৫ ওভার শেষে ৪১/২।
শুরুর দিকে কাটার মাষ্টার মুস্তাফিজ আক্রমনে এসে সুবিধা আদায় করতে ব্যর্থ হন। কিন্তু স্পিসার মিরাজ আর সৈকত জুটি মিলে নাভিশ্বাস তুলে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের। ২৫ ওভার শেষ হবার পরই দলীয় ৫০ রানের কোটা স্পর্শ করে স্বাগতিক দল। দলীয় ৮৬ রানেই ৮ম আর ৯ম উইকটেরে পতন ঘটে।
কিন্তু শেষ জুটির টেনে টুনে দাঁত কামড়ে ক্রিজে পড়ে থাকার মানসিকতায় ওয়েষ্ট ইন্ডিজ শেষ পর্যন্ত দলীয় শত রানের কোটা পেরিয়ে যায়।