আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তিত হবে। এর বাইরে সরকার পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে সরকার পতনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তিত হবে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার কোনো ব্যত্যয় ঘটাতে চাইলে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁত ভাঙা জবাব দেবে।’
ওবায়দুল কাদের বুধবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
গণমাধ্যমে প্রচারিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মিথ্যাচার নির্ভর এবং বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি দেন ওবায়দুল কাদের।
‘সহিংস রক্তপাতের মধ্য দিয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে’- মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে আইনের শাসনের প্রতি পরিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধাশীল এবং সাংবিধানিক বিধি-বিধান অনুযায়ী নির্বাচন ছাড়া আওয়ামী লীগ কখনো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেনি। স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবিধানিক পন্থায় স্বেচ্ছায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের একমাত্র নজির সৃষ্টি করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। এমনকি স্বৈরাচার জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষায় প্রথমে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ এবং পরে তা আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে রুদ্ধ করেছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা দ্বিতীয় আর একটি নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বৈরাচার জিয়ার উত্তরাধিকার খালেদা জিয়াও অনুরূপভাবে ১৯৯৬ সালে ও ২০০৬ সালে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে অগণিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী হত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশ হত্যা-ক্যু, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। বিএনপি তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় একুশে আগস্টের মতো ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাই এদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং স্বাভাবিক ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার-কার্য সম্পন্ন করেছেন। পক্ষান্তরে বিএনপি, স্বাধীন বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায়ন ও পুরস্কৃত করেছে- এমনকি দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও তারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, এমনকি বিচারের দাবি পর্যন্তও করেনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিএনপি মহাসচিবের দেওয়া বিবৃতিটি বিএনপির প্রতিদিনের চিরাচরিত ভাষায় দেওয়া মিথ্যাচারে ভরপুর অপরাজনীতির অংশ ছাড়া আর কিছুই নয়। যশোর জেলা যুবদলের সহসভাপতি বদিউজ্জামান হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেওয়া বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতিতে যে বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে- তা সত্যের অপলাপ।
তিনি বলেন, বিচারাধীন কোনো বিষয়ে মন্তব্য করা আইন সিদ্ধ নয়। কারো রাজনৈতিক পরিচয় কোনো হত্যাকারীর অপরাধকে আড়াল করতে পারে না। হত্যাকারী/অপরাধী যেই হোক, তার বিচার হবেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে সংঘটিত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের শাস্তি ভোগ সেটাই প্রমাণ করে। এমনকি বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার কারণে সরকারদলীয় পদে থেকেও অনেকেই আজ সাজাভোগ করছে।