গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শিশু সন্তান দুই মেয়েকে নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দেয়ার চারদিন পরও বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত খোঁজ মিলেনি মায়ের। তবে ঘটনার তিনদিন পর বুধবার সন্ধ্যায় শিশু মুর্শিদা আক্তারের (৭) লাশ নরসিংদী এলাকা হতে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মুর্শিদা আক্তার (৭) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের মেয়ে।
নরসিংদী বঙ্গারচর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আমিরুল ইসলাম জানান, বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে নরসিংদী জেলার পলাশ থানার নিজামুদ্দিন ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে শিশুর লাশ ভেসে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে নৌ-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে লাশটি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ মা-মেয়ের মধ্যে শিশু মেয়েটির বলে শনাক্ত করা হয়। পরে উদ্ধারকৃত লাশের ছবি নিখোঁজদের স্বজনদের কাছে পাঠানো হয়। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে স্বজনরা রাতেই ওই নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে মুর্শিদার লাশ শনাক্ত করেন। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিহত শিশুর মামা মোজাম্মেল হোসেন জানান, আমাদের এক আত্মীয় ফেসবুকে ছবি দেখে প্রথমে মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি জানান। এরপর নরসিংদীর পলাশ থানার বঙ্গারচর নৌ-ফাঁড়িতে যোগাযোগ করলে ছবি এবং পোশাক দেখে নিশ্চিত হই। রাতেই মরদেহ কাপাসিয়ায় নিয়ে আসি। বৃহস্পতিবার সকালে জানাযা শেষে লাশ দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার দুই মেয়ে তাহমিদা আক্তার (৯) ও মুর্শিদা আক্তারকে (৭) বাজার থেকে জুতা, জামা কাপড় ও সিঙ্গারা কিনে দেয়া কথা বলে তাদের নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন মা আরিফা আক্তার (৪০)। আরিফা আক্তার কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের স্ত্রী এবং স্থানীয় বিবাদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী মুন্সির মেয়ে। দুপুরে ওই দুই শিশু সন্তানকে সিংহশ্রী গ্রামের বরামা সেতু এলাকায় নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে যান। সেখানে গিয়ে হঠাৎ দুই সন্তানের হাত ধরে তাদেরকে নিয়ে নদীতে ঝাপ দেন আরিফা। এসময় স্থানীয়রা এক শিশু তাহমিদা আক্তারকে (৯) উদ্ধার করলেও মা আরিফা আক্তার (৪০) ও এক মেয়ে মুর্শিদা আক্তার (৭) নিখোঁজ ছিল। ঘটনার পর নিখোঁজ মা ও মেয়ে দু’জনকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল কাজ শুরু করলেও তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।