রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায়, গানে মুখরিত হয়ে উঠল মঞ্চ। এভাবেই বাংলার দুই সুবিখ্যাত কবির জন্মজয়ন্তী পালন করা হল চীনে। শনিবার চীনে বেজিংয়ে ভারতীয় দূতাবাসে যৌথভাবে ‘রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী’ উদযাপন করা হল ভারত ও বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে।

শুধু ভারতীয় বা বাংলাদেশিরা নয়, অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিয়েছিলেন চীনা অনুরাগীরাও। পাঠ করেছেন দুই কবির কবিতা, গেয়েছেন তাঁদের লেখা গান। উপস্থিত ছিলেন চীনে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রদীপ কুমার রাওয়াত এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেহেবুব উজ জামান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখতে গিয়ে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতির কথা তুলে ধরেন রাওয়াত। তাঁর কথায়, ‘ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই সমৃদ্ধ ও তা ইতিহাসের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই প্রসারিত রয়েছে এই বন্ধন।  আমাদের বিভক্ত করতে পারে এমন জিনিস খুব কম। তবে সেতুবন্ধনের জন্য রয়েছে বহু বিষয়। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সংহতি, আস্থা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার এক অসামান্য নিদর্শন।’

তিনি বলেন, ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের ‘পঞ্চকবি’র অন্যতম, যাঁরা নিজেদের অমর সৃষ্টি বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশের ক্ষেত্রেই শুধু নয়, জাতি হিসেবে আমাদের আত্মপরিচিতি গড়ে তুলতেও অসামান্য ভূমিকা পালন করেছে। এর সবচেয়ে সরল প্রতিফলন হল, রবীন্দ্রনাথই ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা।  কবিগুরুর জীবন ও আদর্শ আমাদের নিজেদের দেশ ও সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে শেখায়। তাঁর দর্শন আমাদের উভয় দেশকেই অনুপ্রাণিত করে। আর নজরুলের কবিতায় আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন ঐতিহ্যের এক অদ্ভূত মেলবন্ধন।’ অন্যদিকে জামানের বক্তৃতায় উঠে আসে দুই স্বাধীন রাষ্ট্রের অটুট বন্ধনের প্রসঙ্গ।

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাসের বন্ধনে আমরা আবদ্ধ। নজরুলের থেকে রবিঠাকুর ৩৮ বছর বড়। তাঁদের একে অপরের প্রতি ছিল অগাধ শ্রদ্ধা। তাঁদের সৃষ্টি সামাজিক ন্যয়বিচার, অসাম্প্রদায়িকতা এবং মানবতার সূত্রে গাঁথা।’