লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার ডাকালিবান্ধা এলাকায় সার্কাসের নামে অশ্লীল নৃত্যের আসর ভেঙে দিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ‘দি সাধনা লায়ন্স’ সার্কাসটি বন্ধ করে দিয়েছে থানা পুলিশ।
সোমবার (৬জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরাদুল আলম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওই এলাকার দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে সার্কাসে পন্ডেল ঘোরাও করতে গেলে তাদের দাবিতে সার্কাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ মে সারকারি নির্দেশনা মেনে উপজেলার ডাকালিবান্ধা মাঠে সার্কাসের অনুমতি পায় ‘দি সাধনা লায়ন্স’ সার্কাস। ১৭ টি সরকারি নির্দেশনার মধ্যে অধিকাংশ নির্দেশনা অমান্য করাসহ সার্কাসের প্যান্ডেল অশ্লীল নৃত্য পরিচালনা করেন আয়োজক কমিটি।
ফলে ওই এলাকার যুবসমাজ নষ্ট হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে এলাকাবাসী একাধিকবার অভিযোগ করলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি। ওই এলাকার শিক্ষার্থীরা বিক্ষিপ্ত হয়ে রাত সাড়ে দশটার দিকে সার্কাস এর সামনে গিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়ে সার্কাস বন্ধ করে দেয়। এদিকে এনিয়ে সার্কাস প্যান্ডেলের ভিতরে সার্কাস কমিটির লোকজনের সাথে দর্শনার্থীদের তর্ক শুরু হলে দর্শনার্থীরা চেয়ারসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
ওই এলাকার শিক্ষার্থীরা জানান, আগামী ১৯ জুন এসএসসি পরীক্ষা। প্রায় ২০ জন পরিক্ষার্থী আছে এই এলাকায়। আমরা সার্কাসের কারনে পড়াশুনা করতে পারছি না। রাতে যখনি পড়তে বসি তখনি শুরু হয় সার্কাসের গান বাজনা। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে সার্কাস বন্ধের আবেদন জানাই। কিন্তু আমাদের আবেদন কেউ আমলে নেয়নি। ফলে আমরা এলাকা সম্মান রক্ষা করতে এই বিক্ষোভ মিছিল করেছি।
একই এলাকার ডাঃ এনামুল বলেন, আমরা নামাজ পড়তে পারি না, বিকট শব্দে নামাজ পড়তে সমস্যা হয়। আবার আজানের সময়ও তারা গানবাজনা বন্ধ করে না। রাতে অশ্লীল নৃত্য আর জঘন্য গান- বাজনায় ঘুমানো যায় না। এখনি যদি সার্কাস বন্ধ না করা হয় তাহলে যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
হাজী জহির উদ্দিন মাদরাসার শিক্ষক রায়হানুল হক রাজিব বলেন, যুবসমাজকে নষ্ট করার জন্য এখানে সার্কাসের নামে অশ্লীলতা করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সার্কাস পরিচালনার কোন শর্তই মানছেনা আয়োজক কমিটি। ফাকা মাঠে সার্কাস করার অনুমতি থাকলেও আয়োজক কমিটি জনবসতিপুর্ন এলাকায় সার্কাস করছে। মাইকের প্রকট শব্দে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করতে না পারাসহ এলাকাবাসীর রাতে ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে এ সার্কাস বন্ধ করার জন্য জোর দাবী জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী কাছে অভিযোগ করেন যে, রাতে জুয়ার আসর ভেঙে দেয়ার পরেও বিছিন্নভাবে চলা জুয়ার আসর বন্ধ হয়নি। জুয়ার আসরে সর্বশান্ত হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম জানান, সমাজ বিরোধী একটি চক্রের কারণে এলাকার যুবসমাজ বিপদগামী হচ্ছিলো। তাই প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকেই আমরা এই অপকর্মগুলো বন্ধ করেছি।