ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গৃহবধূকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম কররা অভিযোগ পাওয়া গেছে একই এলাকার বাসিন্দা মোঃ আবুল কালাম এর বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল ৯ টার সময় ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত পারভিন বেগম জানান, তার ননদের সঙ্গে একই এলাকার আবুল কালাম গংদের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ জায়গা জমি নিয়ে বিরোধে চলে আসছিল। সোমবার সকালে আমার ননদ বাড়িতে ঢোকার রাস্তাটি মেরামত করার জন্য ড্রেজার ভাড়া করে বালি পালানোর ব্যবস্থা করেন। এমত অবস্থায় মোঃ আবুল কালাম এসে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং বালির জন্য চারপাশে বেড়া দেওয়া কাগজ গুলো ছিড়ে ফালাই , এগুলো কেন ছিড়তেছে এই কথা জিজ্ঞেস করার সাথে সাথে আবুল কালাম অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে । গালমন্দ করতে নিষেধ করলে সাথে সাথে আবুল কালামের নেতৃত্বে আবুল কালামের ছেলে মোঃ পারভেজ (৩২) ,মোঃ হাসান (২৮) ও আবুল কালামের ঘরে কর্মরত মোঃ আল আমিন (৩৫) সহ আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং আবুল কালামের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দ্যা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে, নিজেকে বাঁচানোর জন্য মাথার উপরের কোপ আমি হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করি। তারপরও আবুল কালাম আমার হাতে আরেকটি কোপ দেয়। কোপ দেওয়ার সাথে সাথে আমার হাতের একটি আঙ্গুল হাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ,এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি তারপর আমি উঠে দেখি আমি হাসপাতালের বেডে সোয়া।
পারভিন বেগমের ননদ মোসাঃ গোলেনুর বেগম (৩৮) আবুল কালাম এলাকার চিহ্নিত মাস্তান ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তাহারা এলাকার মধ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও শক্তির মহড়া প্রদর্শন করায় সাধারন লোকজন তাদের ভয়ে ভীত সন্তস্ত্র। তার সাথে আমাদের জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধ চলিয়া আসিতেছিল। একাধিকবার এই বিষয় নিয়ে বিবাদীদের সাথে আমাদের স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হইলেও বিবাদীরা কোন সমাধান না মানিয়া আমাদের জমি-জমা জবর দখল করার পায়তারায় লিপ্ত থাকে। আবুল কালাম তার ছেলেদের সাথে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পূর্ব শত্রুতা বশতঃ হাতে ধারালো দা, লোহার রড, দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়া বে-আইনী ভাবে আমারা বাড়িতে প্রবেশ করিয়া আমার ভাবি পারভিন বেগমকে আমাদের ঘরের সামনের উঠানে এলোপাথারী মারধর করা শুরু করে। আবুল কালাম তাহার হাতে থাকা ধারালো দ্যা দিয়া আমার ভাবি পারভিন আক্তার এর মাথা লক্ষ্য করিয়া কোপ দিলে আমার ভাবি পারভিন তাহার ডান হাত দ্বারা ফিরানোর চেষ্টা করে। ঐ দায়ের কোপ আমার ভাবি পারভিন বেগম এর হাত থেকে একটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আমার ভাবি পারভিন বেগম এর গলায় থাকা একটি স্বর্নের চেইন আবুল কালামের ছেলে হাসান জোরপূর্বক কাড়িয়া নেয়। এসময় আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসলে এরা আমাদের খুন জখম করবে, মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানী করবে, প্রানে মেরে ফেলবে মর্মে বিভিন্ন হুমকী ধামকী দিয়া চলিয়া যায়।
অভিযুক্ত আবুল কালামের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায় । একাধিক বার কল দিও নাম্বারটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান , এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আমরা মামলার তিন নম্বর আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে আশাকরি অতি দ্রুত অন্য আসামিদের আমরা গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পারব।
আশিকুর রহমান শান্ত
ভোলা প্রতিনিধি