মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক বলেছেন, রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়ার তিনটি পথ রয়েছে। একটি নির্বাচনের ব্যালটের মাধ্যমে, অপর দু’টি গণ আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান। আওয়ামী লীগ সবগুলো পথই ব্যবহার করতে জানে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার কোন পথই জানে না। বিএনপি শুধু নির্বাচনে না গিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। তাদের ধারণা কোন প্রভু এসে তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। এ ধারণা অবান্তর ও অবাস্তব।
তিনি শনিবার বিকেলে গাজীপুর জেলার ’৮০ ও ’৯০ দশকের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রথম পুণর্মিলনী অনুষ্ঠাণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী শুধু মহান শহীদ দিবসে প্রভাত ফেরীর সঙ্গীতই রচনা করেন নি, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশে পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতার কথা সারা বিশ্বেও মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি জয়বাংলা পত্রিকা সম্পাদনা করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের খবর সর্বত্র পৌঁছে দিয়ে গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেছেন ঠিক, কিন্তু আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ছিল অগাধ।
তিনি আরো বলেন, এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২৯ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন জিয়া, এরশাদ ও খালেদা। দেশকে তারা সারা বিশ্বের কাছে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করেছেন। অথচ বঙ্গবন্ধুর সাড়ে ৩বছর এবং তাঁর কণ্যা শেখ হাসিনার সাড়ে ১৮ বছর মিলিয়ে প্রায় ২১ বছরে দেশকে স্বয়ং সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলেছে আওয়ামী লীগ সরকার। দেশ এখন বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমরা পেয়েছি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক মহিলা বিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, এ প্রজন্মের ছাত্রলীগের ছেলেরা তাদের সরকারকে ক্ষমতায় দেখেছে। তারা ক্ষমতার স্বাদ ভোগ করেছে। কিন্তু তারা রাজনীতির কন্টকাকীর্ণ পথ দেখে নি। কিভাবে স্বৈরাচার বিরোধী, বিএনপি-জামাত জোট বিরোধী আন্দোলন হয়েছে তা-ও দেখে নি। জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে এসবের ইতিহাস তাদেরকে শুনতে হবে এবং শিক্ষা নিতে হবে।
শ্রীপুরের গ্রীণ ভিউ রিসোর্টে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুনর্মিলনী কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল হাদী শামীম। আব্দুল হালিম সরকার ও হীরা সরকারের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদের প্রশাসক আখতারুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, সহ সভাপতি কাজী আলীম উদ্দিন বুদ্দিন, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধান, মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল কাশেম, রেজাউর রহমান লস্কর, জেলা যুবলীগের আহবায়ক এসএম আলতাব হোসেন, সাবেক ভিপি শেখ মোহাম্মদ পনির প্রমূখ। অনুষ্ঠানে ওই দুই দশকের গাজীপুরের বিভিন্ন ইউনিটের ৫শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।