দেশীয় শ্রমিকবান্ধব বিড়ি শিল্প বন্ধে বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বগুড়া জেলা বিড়ি শ্রমিক ও কর্মচারি ঐক্য ইউনিয়ন। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিস এর সামনে পাঁচ দফা দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। আগামী বাজেটে বিড়িতে বিদ্যমান শুল্ক কমানো, বিড়ির উপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার, বিড়ি শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে বিড়ি কারখানার লাইসেন্স প্রদান বন্ধ করা এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নকলবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান শ্রমিকরা। মানববন্ধন শেষে বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের ডেপুটি কমিশনার এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শ্রমিক নেতারা।

বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিড়ি শ্রমিক ও কর্মচারি ঐক্য ইউনিয়নের আহবায়ক জয়নাল আবেদিন। মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এম কে বাঙালী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহ সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “দেশের প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্পে সমাজের অসহায়, সুবিধা বঞ্চিত, হতদরিদ্র, শারীরিক বিকলঙ্গ, বিধবাসহ লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। অথচ বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্রে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন এ শিল্পটি ধ্বংস করা হচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানীগুলো এদেশের মানুষের ফুসফুস পুড়িয়ে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। এদেশীয় কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর কাছে সুবিধা পেয়ে বিড়ির উপর মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। বিড়ি মালিকরা এই মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা সহ্য করতে না পেরে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে বিড়ি কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকরা কর্ম হারিয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। আমরা দেশের এই লক্ষ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকদের জীবন জীবিকার অবলম্বন বিড়ি শিল্পকে রক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছি।’’

বক্তারা আরো বলেন, “বিদেশী সিগারেট কোম্পানীগুলোকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিতে কতিপয় অসাধু আমলা বিড়ির উপর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে শুল্ক বৃদ্ধি করছে। শুল্ক বৃদ্ধি হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা শুল্ক ফাঁকি দিতে জালব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন নকল বিড়ি তৈরি করে বাজারজাত করছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি বিড়ি শিল্প ও শ্রমিক ধ্বংস করতে বিড়ি শ্রমিকদের প্রকৃত সংখ্যা গোপন করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এছাড়াও বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর যোগসাজসে কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে অস্তিত্ববিহীন বিড়ি কারখানার লাইসেন্স প্রদান করে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিড়ি শ্রমিকদের নিয়ে ষড়যন্ত্র হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।”