গেল মাসেই ভারত সফর করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। এবার বুদ্ধ পূর্ণিমাকে সামনে রেখে নেপাল যাচ্ছেন মোদি। উদ্দেশ্য প্রতিবেশী দেশটির সাথে সম্পর্কোন্নয়ন এবং ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী বলয়কে সুসংহত করা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দুই মাস পেরিয়েছে। এ যুদ্ধ কবে শেষ হবে, তার সঠিক জবাব দিতে পারছে না বিশ্লেষকরা। তবে ইউক্রেন যুদ্ধে বদলে যাওয়া ভূকৌশলগত পরিস্থিতিতে পশ্চিমাদের দৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দুতে ভারত। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় প্রতিবেশী শক্তিকে সুসংহত করার লক্ষ্যে কাজ করছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। তারই অংশ হিসেবে এ সফর মোদির।

দেশটির প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে বুদ্ধ পূর্ণিমা (১৬ মে) উপলক্ষে লুম্বিনীতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, লুম্বিনীতে অবস্থানকালে নরেন্দ্র মোদি মায়াদেবী মন্দির পরিদর্শন করবেন। এ ছাড়া, লুম্বিনী ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট আয়োজিত বুদ্ধ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন। এছাড়াও নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, নেপালের রাজনৈতিক মানচিত্রে উত্তরাখণ্ডের কালাপানি-লিপুলেখ-লিম্পিয়াধুরার ত্রিভুজাকার এলাকা যোগ করা নিয়ে দীর্ঘ বিতর্কের পর প্রধানমন্ত্রীর সফরকে গুরুত্পূর্ণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

নেপাল ও ভারতের মধ্যে ১৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি খোলা সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছে কালাপানি, লিপুলেখ।

প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনায় দুটি দেশ সম্মত হয়েছে যে, সীমান্তের সমস্যা সচিবদের বৈঠকে সমাধান করা হবে। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো বৈঠক হয়নি। মোদির সফরে বিষয়টি গতি পাবে বলেই আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে নেপাল চায় ভারতের সাথে লুম্বিনী ও নেপালগঞ্জকে সংযুক্ত করতে। তবে নেপাল সীমান্তের কাছে গোরক্ষপুরে ভারতের প্রতিরক্ষা ঘাঁটি রয়েছে বলে নেপালের ওই চাওয়ায় আপত্তি রয়েছে দিল্লির। বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সরব হবে নেপাল।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে লুম্বিনীতে ভারতীয় সীমান্তের কাছেই একটি বিমানবন্দর তৈরি করেছে চীন। সেই বিমানবন্দর শের বাহাদুর দেউবা দ্রুত উদ্বোধন করা হবে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে। মোদি লুম্বিনী যাবেন ঠিকই কিন্তু ওই বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন না।

মোদি প্রথমে ভারতের কুশীনগর বিমানবন্দরে নামবেন। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে লুম্বিনীতে যাবেন। গত কয়েক বছরে নেপাল ক্রমশ চীনের ঘনিষ্ঠ হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের সাথে দূরত্ব বেড়েছে নেপালের। তবে ভারত-নেপাল সম্পর্ক মেরামতের প্রয়াস ফের শুরু হয়েছে গত এক বছর। প্রধানমন্ত্রীর সফরের পরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আরো গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র : আনন্দবাজার