আসন্ন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে শেষ মূহুর্তের উৎকন্ঠায় আওয়ামী লীগ নেতারা। শুক্রবার বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত হবে কুমিল্লা সিটিতে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি?

এর আগে কুসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে সব আলোচনাই আওয়ামী লীগের মনোনয়নকে ঘিরে। বিএনপি এ নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ না নেওয়ায় তাদের মনোনয়নের বিষয়ে কোনো আলোচনা নেই।

কিন্তু সরকারী দলের অর্ধডজন প্রার্থীকে নিয়ে নগরবাসীর কৌতুহলের শেষ নেই। কে হচ্ছেন ২০২২ সালের কুসিক নির্বাচনে নৌকার মাঝি? কোন দিকে মোড় নিতে পারে এবারের কুসিক নির্বাচন? প্রার্থী বাছাইয়ে কি তৃণমুলের মতামত প্রধান্য পাবে? কে এগিয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের তালিকায়?

কুমিল্লা নগরবাসীর মাঝে এখন এমন প্রশ্ন বিরাজ করছে। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে হাটে ঘাটে মাঠে সাধারণ জনতার মাঝে আলোচনা শুধু নৌকার মনোনয়ন।

এদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার দলের প্রার্থী বাছাইয়ের উপরই নির্ভর করছে কেমন হবে এবারের নির্বাচন।

জানা যায়, ২০২২ সালের কুসিক নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার দলের মনোনয়ন লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন অর্ধডজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এসব প্রার্থীরা নানা কর্ম তৎপরতার মধ্য দিয়ে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছেন।

এ ছাড়া তাদের কর্মকাণ্ড সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও ধর্না দিয়েছেন। এরই মাঝে কুসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এসব প্রার্থীরা এখন দলের হাইকমান্ডের দিকেই তাকিয়ে আছেন।

তবে শুধু সরকার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাই নয়, এ দলের মনোনয়ন নিয়ে শেষ মুহুর্তের আলোচনা এখন সাধারণ নগরবাসীর মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে।

কুসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রয়াত প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আফজল খানের কন্যা আঞ্জুম সুলতানা সীমা, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও অধ্যক্ষ আফজল খানের ছেলে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদারসহ আরো কয়েকজন। তবে এ ছয়জনের মধ্যেই কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে এমনটাই চুড়ান্ত বলে জানান স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

এদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে চূড়ান্ত লড়াই চলছে সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদিন বাহার গ্রুপ বনাম প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খাঁন গ্রুপের মাঝে। মূলত এ দুটি গ্রুপের মধ্যেই কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে? নাকি তৃতীয় অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে? এ নিয়েই চলছে বিশ্লেষণ।

এমপি বাহার গ্রুপের একক প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। আর আফজল খাঁন গ্রুপের একাধিক প্রার্থী হচ্ছেন আফজল খাঁনকন্যা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা এবং তার ছোট ভাই মাসুদ পারভেজ খাঁন ইমরান।

এ ছাড়া ওই দুই গ্রুপের পরে আলোচনায় রয়েছেন নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু এবং কবিরুল ইসলাম শিকদার।

তবে সাধারণ নগরবাসীর প্রত্যাশা ক্ষমতার লড়াই নয়, সুষ্ঠু‚ অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই নির্বাচিত হউক তাদের আগামীর নগর পিতা।

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি এবং আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যদিয়েই আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু। দলের সভানেত্রী এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমার ত্যাগের মুল্যায়ন করবে বলে আমি আশাবাদী।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, আমার ধমনীতে আওয়ামী লীগের রক্ত প্রবাহিত। জীবনের প্রতিটি ক্ষণেই আমাদের পরিবার শেখ হাসিনার আদেশ নির্দেশ পালন করে আসছে, তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তাই মাথা পেতে নেব।